পৃষ্ঠাসমূহ


নিঃস্প্রানকে কেউ যোগায় না সঞ্জিবনী

লন্ডভন্ড করে দিতে মন চায় সব ধ্বংস
সব ধ্বংস করার ক্ষমতা নাই
তাই রোজ নিজেকে পোড়াই
সবইতো বাল ছাল ছাই ভস্ম
তুমি আর কি করবে
গঙ্গায় ভাসিয়ে দাও
তারপর চলে যাও চলে যাও
দূর দূর বহুদূর
পিছন ফিরে তাকিও না আর
আমিও ভেসে ভেসে
যাব কত দূর কোন সে কূলের ঠীকানায়
কোন সে শশ্মানের ঘাটে
সে আমিও জানি না
শুধু এতটুকু জেনে গেছি
নিঃস্প্রানকে কেউ যোগায় না সঞ্জিবনী

দূরত্ব

দূরত্ব জিনিসটা বড় অদ্ভুত, অজান্তেই হঠাৎ করে তৈরী হয়ে যায় যোজন যোজন দূরত্ব। আর সবচাইতে খারাপ ব্যাপার হচ্ছে একটা সময় অনেক চেষ্টা করেও সেই দূরত্ব আর অতিক্রম করা যায় না। স্কুল জীবনের অনেক বন্ধুর সাথে দীর্ঘদিন পর দেখা হলে অদ্ভুত লাগে। মনে করতে পারি না ওকে তুই বলতাম না তুমি বলতাম। দূরত্ব জিনিসটাকেই হয়ত আমি সবচাইতে বেশী ভয় পাই। কখন কিভাবে সম্পর্গুলো ধ্বংস করে দেয় টেরও পাওয়া যায় না। হঠাৎ করে অনেক অনেক দিন পরে বোঝা যায় বুকের মধ্যে দূরত্ব তার ধ্বংসযঙ্ঘ চালিয়ে একটা শূন্যতার ক্ষত তৈরী করে ফেলেছে আর সে শূন্যতা কখনো পূর্ন হবার নয়-রুদ্র অনির্বান

এত কিছু চাইনি আমি

এত কিছু চাইনি আমি
চেয়ে ছিলাম আরও কিছু কম
একখানা দরজা আর
একটুখানি নিকনো উঠোন
 লাল বৌয়ের চোখের মায়া
 মায়ের আচলের একটু ছায়া
 ঘামে ভেজা শরীরে
 ঠাণ্ডা দীঘির জল
 ভাতের পাতে দু'টো কাচা মরিচ
 আর একটু খানি ঝোল
 এত কিছু চাইনি আমি
 চেয়ে ছিলাম আরও কিছু কম
 ঘরে ফেরার দেরিতে
তোমার উদ্বিগ্ন দৃষ্টি
 আর বাবার আদরের বকুনি
 ভাইগুলোর আবদারের জালাতন
 এত কিছু চাইনি আমি
 চেয়ে ছিলাম আরও কিছু কম
 তোমার আমার ভালবাসার
 একখানা ছোট সংসার

এক ফালি চাঁদ

অতঃপর পৃথিবীর পরে নেমে আসে
একাদশীর আধখানা চাঁদ
জ্যোৎস্না ছড়িয়ে দিয়ে
চেয়ে থাকে টলটলা পুকুরের জলে
পায়রার বকবকুম স্বরে
খসে যায় অভিমানী তারাগুলো
আকাশের বুকে জেগে রয়
খালি এক ফালি চাঁদ
বাতাসে ঝরে যাওয়া আমের বোলের
বেদনা বুকে নিয়ে চেয়ে রয় নীরবে
পথিক ধীরে এসে বসে ধানের শিষের পাশে
বুকে তার পথ হারাবার ব্যথা নিয়ে
চেয়ে রয় আকাশের পানে
এক ফালি চাঁদ বুকে জড়িয়ে নেয়
পথিকের বেদনার জল মুছে দিয়ে
বাতলে দেয় নতুন পথের সন্ধান
ক্লান্ত পথিক উঠে দাড়ায় ধীর পায়ে
চাঁদের আলোয় খুঁজে নেয় আপন ছায়া সঙ্গীরে
অতঃপর এক ফালি চাঁদ হারায় অজানায়
পৃথিবী কভু তারে খুঁজে পায় নাকো আর

ভাঙ্গা সংসার

যখন গিয়েছি চলে
নিস্তব্ধতা আর চাতকের ব্যথা নিয়ে
ভাঙ্গা উঠান, ভাঙ্গা সংসার ফেলে
বহু বছরের তরে একে অপরকে ছেড়ে
মলিন মুখ, ঠাণ্ডা হৄদয়
সত্যিই সেই সময় বিষাদ ছুঁয়েছে আমায়
সকালের শিশির হয়েছে কান্নার জল
কি যেন হারিয়ে গেল জ্বালিয়ে অনির্বাণ
সব চাওয়া আহত প্রজাপতির ডানা
টিম টিমে আলোয় সারাটা পথ চলা
শুনতে পাই সেই প্রিয় নাম
হাহাকার ওঠা পাতা ঝরা গ্রাম
শুক্লা পক্ষে ফিরে এস প্রিয়
হাজার বছর পরে এই ভাঙ্গা সংসারে
আমরা আবার মিলব নাহয়
মেঘের ওপারে।

বেচে আছি দুঃস্বপ্নের মাঝে স্বপ্ন সাজিয়ে

কাক ভেজা সকাল, দুপুর, বৃষ্টি ভেজা রাত
পুরনো স্মৃতি কাছে এসে দেয় সাড়া
বেদনা বিধুর বেদনা মধুর
কথা হয় দুজনে পাশে বসে, ভোর হয় রাত
চাদের বুকে এক টুকরো মেঘ এসে
তোর ছবি একে দিয়ে যায় হারিয়ে
চোখের জল শুকিয়ে গেছে
এখন আর কাঁদি না
চাতকের বুকে হাহাকার ওঠে
ফিরে আসবি না?
তৃষ্ণার্ত ক্ষুধার্ত মন বিবাগী হয়ে
বসে বসে কথা হয় প্রতিক্ষণ
বেচে আছি দুঃস্বপ্নের মাঝে স্বপ্ন সাজিয়ে।

অভিমানী

নীলচে তারার আলোর নীচে
শুয়ে আছি ঘাসের পরে
নক্ষত্রের প্রশ্নের উওর খুঁজি
উড়ে যাওয়া মেঘের দলে
ডাহুক ডাকছে কোন এক বিরহী
সুরে, মনে পরে যায়, মনে পরে যায়
অনেক আগের কথা, ঘরে ফেরা
চেনা মুখ ভালবেসে, কাছে ডাকে আমায়
সেই সব স্মৃতি-গুলো মিশে আছে
গভীর আবেশে এই সব হিজল
তমাল আর বটবৃক্ষের মাঝে
উষ্ণতার দারুণ মুহূর্তে কিছু ছল
কিছু রহস্য উপেক্ষা করে বুকে
টেনে নিয়ে একরাশ বেদনা
জীবন কেটে গেছে আজ বহুদূরে
কিছু কথা আর না বলা কথার দোনোমনা
নিয়ে অভিমানী হয়ে শুয়ে আছি
ঘাসের পরে, সাঁঝের বেলা সন্ধ্যা প্রদীপ
গেলে নিভি, জেগে উঠি পুরনো
প্রণয়ের হাতছানিতে, এই সব ঝরা
পাতা আর পেঁচার রাত জাগা শব্দ
কানে নিয়ে শুয়ে থাকি, অভিমানী ঘাসের পরে
বহু বছর ধরে, শুধু সাঁঝের পরে ফিরে আসি
তোমাদের এই সব ভালবেসে

খামখেয়ালি

আমার দোতলা বাড়ী আর
লাল গাড়ীটার স্বপ্নের কথা
মনে আছে তোর?
আমি গ্যাদা কে সাথে নিয়ে
গাড়ী বারান্দায় গলা-বন্ধনী তে হাসফাস করছি
আর তুই দোতলার বারান্দায়
ঘুম ঘুম চোখে তাকিয়ে আছিস
তুই স্বপ্নটা শুনে বলেছিলি
"তোমরা ছেলেদের সবার স্বপ্ন
একরকম হয় কেন?"
আচ্ছা শোন আমি স্বপ্নটা বদলে দিয়েছি
দোতলা বাড়ীর দরকার নেই
আমরা থাকব বনে জঙ্গলে
প্রকৃতি মায়ের কোলে
আর গাড়ীটা বদলে দিয়েছি
ম্যাজিক কার্পেটে, শুধু জিনি টাকেই খুঁজে
পাচ্ছি না, যে তোকে কাঁধে করে আমার
কাছে উড়িয়ে আনবে সে উপায় ও নেই
অসুবিধা নেই, যতদিন গাধাটাকে না
পাচ্ছি তুই সোনার কাঠি রূপার কাঠি
জীয়ন দিয়ে ঘুমিয়ে থাকিস
আর এই ফাকে আমি অসমাপ্ত কাজগুলো
শেষ করে ফেলি
জঙ্গলটাকে সাজাব ১০০৩২৩ কৃষ্ণচূড়া দিয়ে
চাঁদের গলায় একটা দড়ি দিয়ে
বেধে রাখব যেন অমাবস্যায় হারাতে না পারে
আর নদীটা বয়ে যাবে ঠিক জঙ্গলের মাঝ দিয়ে
একে বেকে হাজার শাখা প্রশাখা হয়ে
নদীটাকে বেশী না মাএ ২৩৭ কি.মি. সরিয়ে আনলেই হবে
কিন্তু তোর চিকেন ফ্রাই আর পিৎজজা পাচ্ছি না কোথাও
আচ্ছা থাক দু'জন না হয় ভালবাসার
মৌনতা খাব
মানুষ সবার সামনে হাসে কিন্তু কাঁদে একা বা যাকে সে অনেক ভালবাসে তার সামনে- রুদ্র অনির্বান
রন্দ্রে রন্দ্রে বিষ
অনুতে অনুতে পাপ
একটা জন্ম নষ্ট হল
কিসের নেশায়?

স্কুল শেষ বেজে গেছে ছুটির ঘন্টা

আমি অপেক্ষায় আছি
তুমি কবে আসবে
এ জায়গাটা বসবাসের
অযোগ্য করে ফেলেছি
তুমি কখন হাত ধরবে
... কানে কানে বলবে 'বাড়ী চল'
পৃথিবীতে আমার কোন ঘর নেই
তুমিই বল আমি কোথায় যাব
আমি খরচ করে ফেলেছি সবকটি পয়সা
কি দিয়ে কিনবো নতুন হাস্নাহেনা
আমি কবে যাব আমার ঘরে
স্কুল শেষ বেজে গেছে ছুটির ঘন্টা
হে খোদা তুমি আসবে না
আমাকে সবুজ গালিচার
বাগান বাড়ীতে নিয়ে যেতে
স্কুল শেষ বেজে গেছে ছুটির ঘন্টা
আমাকে হাত ধরে বাড়ী নিয়ে চল
কেউ কাঁদতে শেখায় আর কেউ হাসতে। কেউ দূরে চলে যায় বলেই মানুষ কাঁদতে শেখে। আর কেউ কাছে আসে বলেই মানুষ হাসতে শেখে। যে কাঁদতে শেখায় সে চলে যাবার সময় কান্না সাথে নিয়ে যায় না। কিন্তু যে হাসতে শেখায় সে যাবার সময় হাসিটুকু সাথে নিয়ে চলে যায়

ভীষন বরষায় ভিন্ন দুই কবি

বরফ কুচি বাতাস
বৃষ্টির চাবুক
ছুটে আসা ধূলো বালি বলে গেল
জীবন ছুটতে ভিন্ন কোন পথে
কি চায় বালক? মৃত্যু?
না কি অশৈশব চুরি হয়ে যাওয়া
জীবনকে নিংড়ে চায় অমৃতের প্রসাদ
এসব কিছুতেই যায় আসে না কিছু
হঠাৎ পাওয়া এ কালবৈশাখী ঝড়ে
সে শুধুই একজন কবি
সঙ্গীটি তার প্রিয়তমা নয়
আগামীর স্বপ্নে বিভোর এক ভিন্ন কবি
জীবনকে যে চায় বেধে ফেলতে
রঙ্গীন পর্দার ফ্রেমে
এই ভীষন বরষায় ভিন্ন দুই কবির
সঙ্গী হবার কথা ছিল কোমল কোন উষ্ণতা
কিংবা মুঠোফোনের প্রেমালাপ
কেন হল না? সে ব্যাপারে দুজন কেন উদাসী?
তাদের পাশেপাশে ছুটে চলে নবাগত ভালবাসা
আবৃত স্তনের উষ্ণতা পিঠের আশ্রয়ে
মেয়েটি হাত পেতে তুলে নেয় বৃষ্টির জল
কবি দুজন বুঝে নেয়
এ পথ উষ্ণতার
ভালবাসার বৃষ্টিতে ভেজার
পথ বদলে দ্রুত এগিয়ে যাওয়া ভিন্ন জলের সন্ধানে
ধ্যাত এই ভীষন বরষার রাতে
শূরিখানায় তালা বড্ড বেমানান
অতৃপ্ত দুটি মাতাল জ্বলন্ত সিগারেট হাতে
দাড়িয়ে দাড়িয়ে তৃষ্ণার আগুনে ভেজে

এ প্রভাত আমার নয়

সূর্যস্নানের এসেছে সময়
আড়মোড়া ভেঙ্গে জেগে ওঠে কচি সবুজের প্রান
ঘুমের কোলে ঢলে পড়ে রাতজাগা নিশাচর ঝি ঝি পোকা
কোথাও প্রভাত কোথাও অনন্ত রাত

... রাত ভোর হয় কোথাও গভীর কামনায় ভালবাসা
ভালবাসাও ঘুমায় রাতভর ক্লান্তির শেষে
একটা গালের টোলে হাসে প্রথম প্রভাত
দুটি সুখ খুব কাছাকাছি

চোখের ক্লান্তি নিয়ে আঁকা স্বপ্ন
কত কিছু দেখে আধার ভালবেসে
এ প্রভাত আমার নয়; নয় এ সূর্যস্নান
অভিশপ্ত আধার নিয়ে আকিবুকি

কার্ণিশে কিচিরমিচির চড়ুইয়ের প্রান
অহবান করে নতুন সূর্য কিরণ
ঘাস আর শিশিরের আপাতত দিনভর আড়ি
কথা হবে পরবর্তি সূর্যাস্তে

মাইল হাজার মাইল দূরত্ব
আকাশে ঘেমের ঘনঘটা
বাতাস এসে বলে গেল কারো বুকের শূন্যতা
বৃষ্টি হোক ছুয়ে দেখি কতটা

দূরে দূরে সওদা হয় কাছাকাছি আসার
আকাশের বুকে ভাসে আমার একখন্ড মেঘ
আমার বুকে একটুকরো আকাশ
দুজনের মিলেমিশে শূন্যতা

এ প্রভাত আমার নয়
আমারতো অনন্ত শূন্যতা
এ প্রভাত আমার নয়; নয় এ সূর্যস্নান
অভিশপ্ত আধার নিয়ে আকিবুকি

আমি আর আকাশ

এখনও মেটেনি তৃষ্ণা
দু'চার পেগ আরও হয়ে যাক
মাতাল না হলে জলের অপমান
তুমি যাচ্ছ চলে?
যাও বোতলটা দিয়ে যাও
আচ্ছা পেয়াজ কুচি লাগবে না
শুধু শুধু জলের সাথে রাগ!!!
আকাশ দেখেছ আছ?
ওহো সাত সকালেই তার
সে কি কান্না
... আমার জল নেই
তার গ্লাসের পর গ্লাস
দ্রবীভূত হোক আরও কিছু মেঘ
তারপর দুজনে মিলে কাঁদবো
আমি আর আকাশ...

শান্তি ঘুম ভালবাসা নয়

কোথাও বাজে একলা বাঁশী
দোতারাটা একলাই কাঁদে
এমন সময় আমার ইচ্ছে করে
সব ছেড়ে যেদিকে দু'চোখ যায়
চলে যাই দূরে; দূরে বহুদূরে
রাত শেষে ফোটে প্রভাত
ইচ্ছে করে অনন্তকাল
আটকে রাখি এই আধার
আর টুপ করে ডুবে যাই
অতল কোন দীঘির জলে
যেখানে শুধুই মৌনতা
গভীর থেকে আরও গভীরে
যেখানে খুব গোপনে বাস করে
আমার ভেতরের আমি
দুজনে হাতে হাত রেখে
ধ্যানমগ্ন হয়ে বসে থাকি
শত শত শতাব্দী
শান্তি ঘুম ভালবাসা নয়
আরও গভীর কিছু
আমি আর আমি দুজন শুধু
শীতল চারপাশ
সদ্যস্নাত শরীরের সুবাস
কচি সবুজ ঘাস হয়ত
হয়ত মাটির ঘর
কিছুই নয় হয়ত শুধুই শূন্যতা
আমি আর আমাকে ঘিরে
মহাকাশ মহাকাল
অনন্তের পথ চলা নয়
পাথরের স্হিরতা
সূর্য নক্ষএ চাঁদ ডুবে যাক; জেগে উঠুক
এসবই নির্থক এমন এক গভীরতা
আমি ডুবে যাই
জনম জনমের তরে
প্রতিদিনের মৃত্যু থেমে যাক
একবার শূন্য হতে চাই
শেষবার বাজী হোক সবটুকু নিয়ে
আমি দাড়িয়ে আছি ধূলোর মাঝে
তুমি যাবে আমার সাথে?

তুমি যত দূরে যাও

তুমি যত দূরে যাও
 পৃথিবীর উপরে নীল আকাশ
 কৃষ্ণ কাল মেঘ
 বুকে তার ঘন বরষা
 বাতাসের ফিসফিসানি
 অসীম সাগর আধার
 মাস্তুলে বাধা অমাবস্যা
 উড়ে যাওয়া শঙ্খচিল
 ছেরা ছেরা দ্বীপ
 ঝাউবন কাশফুল
 বনহংসের বুকে শূন্যতা
 রাখালের বাঁশীতে বিষ
 তুমি যত দূরে যাও
 পায়ের নীচে দূর্বা ঘাস
 ধূলো ধূলো পথ
 পথে পথে নাগলিংগম
 শ্যাওলা দীঘি কলমীলতা
 নির্জন দুপুর গ্রাম
 শূন্যতার কাছাকাছি বসবাস
 তুমি যতদূরে যাও........
শীতার্ত এই আধারে আমি
আত্মহত্যা করি রোজ রাতে
আর প্রতিটি সকাল আসে
আত্মহত্যার আধারে ডুবে যাব বলে

অপূর্ণ আমি

কুয়াশার ঘুম ভেঙ্গে জেগে
ওঠে এক ফালি চাঁদ
কথা ছিল বয়ে চলা জীবনের
নদী বেয়ে হাতে ধরে হাত
শিশিরের বুক চিরে হেসে
ওঠে নক্ষত্র আর তারা
ডাহুকের ডাক শুনে
এক খন্ড মেঘ কেঁদে হয় সারা
রাত ভোর হলে পরে
ঘুম ভাঙ্গে একলা শালিকের
সারা বেলা খুঁজে মরে আপন ছায়া সঙ্গীরে
সূর্যের ঘুম এলে মুখ লুকায়
সমুদ্র উত্তাল করে আশ্রয়
ঝরা পাতা ঝরে যায়
নিঃশব্দে সূর্য বিদায়ের কান্না লুকায়
পাহাড়ের বুকে ঢেউ এলে পর
তৃষ্ণার্ত হয়ে ছুটে চলে
ঝর্না হয়ে ঝরে যায়, ভুলে আপন ঘর
জীবনের রং গুলো মুছে দিয়ে
মিশে যায় সবকিছু হাওয়ায়
পূর্ণতা খুঁজে ফিরি, অপূর্ণ আমি
তোমার চোখের মায়ায়।

ইচ্ছে করলেই

ইচ্ছে করলেই হতে পারে সাজান বাগান
ইচ্ছে করলেই শেষ হতে পারে এই চাতকের গান
ইচ্ছে করলেই হতে পারে অরণ্যে অরান্যক
ইচ্ছে করলেই হতে পারি নতুন রঙ্গে ধন্য
ইচ্ছে করলেই পুড়িয়ে সব স্মৃতি
গড়তে পারি ভালবাসার সমাধি
ইচ্ছে করলেই বাধতে পারি মনটাকে শক্ত হাতে
ইচ্ছে করলেই যেতে পারি মেঘের ওপারে
তবু বলি কেন যাব, হারিয়েছ তুমি
ভালবাসা হারায়নি, এভাবেই কেটে যাবে
বদলে নেব না নিজেকে সময়ের স্রোতে
যাও চলে যাও, খুঁজে নাও নতুন গদ্য
এই আমার ভাল, কান্না ভেজা পদ্য

সাদা শাড়ী, নীল পাঞ্জাবী

তুই কি পৌঁছে গেছিস
সাদা জমিন আর কালো
পারের শাড়ী আর নাকে
বিন্দু বিন্দু ঘাম নিয়ে
কাচের চুড়ি আর কপালে কালো টিপ দিয়ে
আমার নীল পাঞ্জাবীটা কোথাও খুঁজে পাচ্ছি না
তন্ন তন্ন করে খুঁজেছি
প্রতিটি ড্রয়ার, খাটের নীচে
তোষক বালিশ উল্টে পাল্টে
পুরো ঘর তছনছ, কোথাও নেই
আচ্ছা শোন মন খারাপ করিস না
গুটি পোকার চাষ শুরু হয়ে গেছে
আর কিছু দিন পর ওদের বুকে
জন্ম নেবে মিহি সিল্ক
তাতির সাথে আগেই কথা হয়ে গেছে
রেশমি সুতা ঘরে তুললেই ওরা কাজ
শুরু করে দেবে
কথা দিয়েছে আমার নীল পাঞ্জাবীটা
ফিরিয়ে দেবে এবার
তুই একটু অপেক্ষা করতে পারবি না সোনা?

অরণ্য

দিনক্ষণ আজ আর মনে নেই
ধানমন্ডি ২৭, রিক্সায় পাশাপাশি
তুই আর আমি
গোলা আইসক্রিম এর ভ্যান চোখে পরতেই
তুই যেন সাত বছরের খুকি হয়ে গেলি
দশ বিশ জনের লাইন ঠেলে
হাজার টাকার নোট ভেঙ্গে
তোর হাতে তুলে দিলাম
মাল্টি-কালার এর একটা গোলা
সেই ষাট টাকার গোলা পাওয়ার
উচ্ছ্বাস, একটা নক্ষএ তোর হাতে
তুলে দিলে দেখতে পেতাম কিনা জানি না
তোর ঠোটের উষ্ণতায় গোলা বিগলিত হয়ে
গলে গলে পানি হতে লাগল
তাই দেখে তোর মনও হয়ত আদ্র
হয়ে উঠল আমার প্রতি
অরণ্যকে খুঁজে এনে দেবার প্রতিজ্ঞা করে
বসলি কি জানি কি মনে করে
সময়ের সাথে সাথে গোলা শেষ হল
তোর ঠাণ্ডা হিম শীতল ঠোটের মত
হয়ত হৄদয় টাও শীতল হয়ে গেল
আমার অরণ্যকে আর খুঁজে দিলি না
আজ আর তুই নেই
আর আমি? আজও
নিঃস্তরঙ্গ তরঙ্গের মাঝে খুঁজে ফিরি আমার অরণ্যকে

এ এমনই

জানিনি আমি কিছুই
শুনিনি কোন কথা
যাচাই করিনি কষ্টি পাথরে
বর্ষায় ভিজে আমি ছিলাম সুখে
রৌদ্র খরতাপে পুড়ে পুড়ে
... নিজেকে বুঝিয়েছি এ এমনই
দূর হতে দূরে যেতে যেতে আমি
শুনেছি কি সে গান
মিথ্যা প্রলাপ বকে
নিজেকে বুঝিয়েছি এ এমনই
সবটুকু নিঃশেষ হলে
হাহাকার বুকে পিষে
সামাজিকতার হাসি হেসেছি কতবার
আর যে জিতে গেল
প্রতিটি মিথ্যা চালে
প্রশ্ন জাগে
সে আসলে কি পেল?
হারজিতেরই বুঝি খেলা ছিল
তবে কে হারল কে জিতল?
আমি হাসি; মাতাল হই
দেশী কিংবা বিদেশী লেবেলে
আর মনে মনে বলি এ এমনই
মাতাল হওয়া যদি হেরে যাওয়া হয়
সুস্থ মস্তিষ্কে তুমি কতটুকু জিতলে?
আসলে কিছুতেই কিছু নয়
আমরাই ছিলাম গুটি
ভালবাসা খেলে গেছে দারূন ধূর্ততায়
এ এমনই

রোদ্রিতা কেমন আছ?

 রোদ্রিতা কেমন আছ?
আমি হয়ে আছি বড় এলোমেলো
কয়েক পেগ ভোদকা আর এটলাস বিয়ারের
মাথা ব্যথা নিয়ে তোমাকে লিখতে বসেছি
আজ প্রভাতের সূর্য দেখেছ?
পাখিগুলো ছুয়ে ছিল ডানা
গভীর ঘুমে আমি হয়ত স্বপ্ন দেখেছি
... যখন ঘুম থেকে উঠলাম তখন পড়ন্ত বিকেল
সূর্যটা হাই তুলছে ঘুমোবে বলে
আমি জেগে উঠতেই বুকের মধ্যে নড়েচড়ে
কষ্টগুলো জানান দিয়ে গেল তারা দিব্যি জেগে আছে
রাতের আধারে পরীগুলো চলে গেল ভুল ঠিকানায়
আমি নিজের সাথে আড্ডা দিতে
বন্ধুদের ফাকি দিয়ে
মোবাইল সাইলেন্ট করে
এই ব্যস্ত শহরের জ্যাম ঠেলে
পৌছে গেলাম সুরিখানায়
ফিরতি পথে ভয় হচ্ছিল
চার চাকার কোন দানব
আমাকে মেরে না ফেলে আবার
ঘরে ফিরেছি কিংবা কোন জেলখানা
কি জানি আজকাল পুরো পৃথিবীকেই
একটা মস্তবড় জেলখানা মনে হয়
তুমি আমি আমরা সকলেই তা কয়েদী
হয়ত আমাদের কৃতকর্ম অনুযায়ী
এক একজনের কঠিন থেকে কঠিনতর জীবন যাপন
কিন্তু আমি অনেক খুজেও আমার
অপরাধনামার কেস সটাডি পাচ্ছি না
কি অপরাধে হাজতবাস সেটা জানলে
অন্তত একটু সান্তনা থাকতো
রোদ্রিতা কেমন আছ?
আমি হয়ে আছি বড় এলোমেলো
আচ্ছা শোন কখনো সময় হলে
আমার কবিতার বইগুলো
একটু গুছিয়ে দিয়ে যেও
কি দেবে না?

অপেক্ষা

সময়ের সব চেয়ে বড় সমস্যা সে প্রতি নিয়ত বদলায়.....প্রতিটি মানুষের নিজস্ব একটা সময় ঘড়ি থাকলে ভাল হত....আমার এখন ভাল লাগছে... নো প্রব্লেম ঘড়ি বন্ধ করে দাও...যতক্ষন ইচ্ছে ভাল লাগাকে উপভোগ করে আবার ঘড়ি চালু করে দিলাম...মন খারাপ? ঘড়ির কাটা ঘুড়িয়ে মন খারাপের সময়টুকু পার হয়ে গেলাম....এতে অবশ্য একটা সমস্যা আছে...কোন কারনে যদি ঘড়ি নষ্ট হয়ে যায় তবে যে যেখানে আছে সেখানেই আটকে থাকবে...ধরুন যে বাথরুমে গোসল করছে সে সারা জীবন গোসলই করবে....যে খাচ্ছে বছরে পর বছর সে খেয়েই যাচ্ছে....সব চাইতে কষ্ট হবে যে অপেক্ষায় আছে....তার অপেক্ষা কোন দিন শেষ হবে না...অবশ্য জন্মের পর থেকেই আমরা অপেক্ষায় থাকি...কিসের অপেক্ষা জানেন?...মৃত্যুর অপেক্ষা...আর এই অপেক্ষা দূর্বিসহ তাই ছেলে ভুলানোর মত আমরা পড়াশুনা করি, চাকরি করি, সংসার করি, রাজনীতি, ঝগড়া বন্ধুত্ব ভালবাসা আসলে সবকিছুর মূলে একটাই নিজেকে যে ভাবে পারা যায় ভুলিয়ে রাখা....আমি অপেক্ষায় আছি..

আলো নিভিয়ে দাও

আলো নিভিয়ে দাও
বড্ড বেশী উজ্জ্বলতা এখানে
বড় বেশী কোলাহল হৈ চৈ
দেয়াল জুড়ে দু'তিন পল্লা ম্যাক-আপের আস্তরণ
বাতাসে কড়া পারফিউমের ঝাঁঝ
চারপাশ জুড়ে কিছু অসুখ লুকীয়ে রাখা সুখী মুখ
অথচ সবাই জানি দূরত্ব যোজন যোজন
এস মুছে দেই আমাদের অতীত গল্প
ভুলে যাই সামনের অনিশ্চয়তা
আজ থাকে শুরু হোক নতুন পথ চলা
আরও কিছুটা কাছাকাছি এসো
যতটা কাছে এলে
নিজের হৃৎস্পন্দন কে বিশ্বাসঘাতক মনে হয়
তোমার নিঃশ্বাস কে নিজের বলে ভ্রম হয়
নিরাশ্রয় আঙুলগুলো হয়ে ওঠা বাকঁচতুর
নিজের অস্তিত্বকে গ্রাশকরে নেয় উষ্ণতা
চারদিকে শোনা যায় কবুতর এর বাকবাকুম
আলো নিভিয়ে দাও
এসো মুছে দেই আমাদের অতীত
ভুলে যাই আমাদের নিয়ন্ত্রিত ভবিষ্যৎ
এই মুহূর্ত থেকে জীবন হোক ভীষণভাবে খুব কাছাকাছি

আজকাল জীবন যাপন

ক্লান্ত দুপুর শ্রান্ত পথিক
তপ্ত পিচ ঢালা পথে
নতুন করে পথ চলা
দূরে বহু দূরে নীলিমা
যেখানে নেমে এসে
চুমে দেয় ধান-শালিকের পালক
সেখানেই মিলনের শেষ আকাঙ্ক্ষা
পেছনের পথে একে বেকে শুয়ে আছে
হঠাৎ মরে যাওয়া নদীর শুকিয়ে যাওয়া বুক
এমন করে শুকিয়ে যেতে হয় বুঝি?
এমন হঠাৎ মৃত্যু মেনে নেয়া যায় বুঝি?
এ যেন আমাজনে গ্রীষ্মের দাবানল
ভেতরটা এমন করেই পোড়ে বুঝি আজকাল?
এমন শূন্যতার হাহাকার কেন সাহারার বুকে?
মিলন হবে, ঠিক মিলে যাবে একদিন
ঐ দূরের নীলিমায় অবাধ্য ডানা মেলে
একদিন ঠিক উড়ে যাবে রাতজাগা এক জোড়া বিহঙ্গ।
ততদিন না হয় জ্বলে পুড়ে খাক হয়ে যাক এই নদী
এই পথ, ক্লান্ত দুপুর, পথিক, পথিকের দুঃখ
আর বেদনার অতীত।

শিকারি

বৃদ্ধ অশ্বত্থের বুক থেকে শূন্যে
ডানা মেলে দেয় শঙ্খচিল
কিছুটা আবোল তাবল উড়ে উড়ে
পৌঁছে যায় সূর্যের আরও কিছুটা কাছাকাছি
স্থির ডানায় ভর করে বুঝে নেয়
বাতাসের গতিবিধি
সোনালী রোদ্দুর তার মসৃণ পালকে
যেন পিছলে সরে যায় সমীহে
ঈশ্বরের আশীর্বাদ পুষ্ট হয়ে পৌঁছে যায়
একটা নির্দিষ্ট উচ্চতায়
নির্দিষ্ট কক্ষপথে নিঃস্পন্দন
উড়ে চলে অবিরাম
পৃথিবী হাজার ব্যস্ততায় ভুলে যায়
তার জলজ্যান্ত অস্তিত্ব
একবার মাথা তুলে দেখে নেয়
ছোট ছোট মেঘদের দল
তাদেরই কেউ দূত হয়ে দিয়ে
যায় সীমান্তের খবর
ভূপৃষ্ঠের বুকে তার ছায়া ঘুরে ঘুরে
ষড়যন্ত্রের বৃও রচনা করে চলে
আপাত দৃষ্টিতে শুধুই উড়ে যাওয়া বলে
ভ্রম হলে ক্ষতি নেই কোন
শুধু অপেক্ষা, শুধুই নির্মম অপেক্ষা!!!!
তারপর সঠিক সময় আর সুযোগের আগমনে
চোখের পলক ফেলবার আগেই
শিকারি তুলে নেয় তার কাঙ্ক্ষিত শিকার।।

ভালবাসা ফিরে গেছে চিরবসন্তের দেশে

এখানে বড্ড শীতের প্রকোপ
উষ্ণতা নেই কোথাও
ঠাণ্ডা হাত শীতল চাহনি
হৃদয়গুলো ঢেউহীন অস্থির
দেবদারুর বুক থেকে ঝরে পরা
শুকনো পাতার বুকে শুধুই
কষ্টের ক্ষত
বিশ্বাসঘাতক সূর্যের হাসি
কুয়াশার বুক চিরে
পথ দেখাবে না কখনো
নিশুতি পেঁচার বোবা কান্নার ধ্বনি
প্রতিধ্বনি হয়ে ফিরে এসে
বারবার স্মরণ করিয়ে দেয়
এখানে জীবন মানে মৃত্যুর অপেক্ষা
এখানে সুন্দর নেই, সুন্দর
পথ ভুলে হারিয়ে গেছে গত
শতাব্দীগুলোতে, ফিরে আসেনি কখনো
বসন্ত আসার আগেই চৈত্রের খরতাপে
পুড়ে যাবে পৃথিবীর স্তন
তাই এখানে ভালবাসা নেই
ভালবাসা ফিরে গেছে চিরবসন্তের দেশে

আজন্ম অসভ্য

অনন্তের পথে হেটে হেটে
যুবকেরা ক্লান্ত হলে পর
এসে বসে স্রোতস্বিনী নদীটির পাশে
আজলা ভরে চোখে মুখে জল ছিটায়
ঠান্ডা শীতল জলে খোজে দুদন্ডের অবসর
আরবের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের শেষে
যুবকেরা শীতার্ত মরুভূমীর রাতে
উষ্ণতার খোজে ভীড় জমায় পান্থশালায়
দু'চার গ্লাস উল্টে দিয়ে ভুলে যেতে
চায় শত্রুর ভীতু চোখে মৃত্যুর ছাপ
যুবতীর কোমল আঙ্গুল বেয়ে হারিয়ে যায়
কালসিটে হয়ে যাওয়া রক্তের দাগ
সারাদিনের ক্লান্তি মুছে দিয়ে এই সব যুবকেরা
জ্যাোস্নার আধারে ফসলী করে তোলে বিরান মাঠ
শত শত কালো মানুষের রক্তের
নদী বেয়ে তুলে আনা হীরক খন্ডে
যুবকের নেই কোন অভিলাষ
এই সব যুবকেরা! এই সব যুবকেরা!
বৃক্ষমাতার অশ্রু মুছে দিয়ে
পৃথিবীর থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে হিংস্র কুঠার
এরাই কামান আর বারুদের পোড়া
কটু গন্ধ বাতাসে ছড়িয়ে দিয়ে
করে গেছে হিংস্র উল্লাস
তারপর হয়ে গেছে ধূসর ইতিহাস

হৃদয়ের গভীরতা বাড়ে না

অসীম নীলের ঢেউ গুনে গুনে
একদিন ঢেউ হয়ে গেছি
উড়ে যাওয়া এ্যালবাট্রসের ডানার
ব্যাপ্তির সাথে তাল মিলিয়ে
ডানা মেলে দিয়েছি
বঙ্গোপসাগর থেকে ভূমধ্যসাগর হয়ে
অতলান্তিক কিংবা প্রশান্তির দিকে
অবশেষে জেনেছি
জোয়ার ভাটার অমোঘ টানে
হৃদয়ের গভীরতা বাড়ে না
শুধুই পলি জমে

পারাপার

অতৃপ্ত আত্মার মত ডানা ঝাপটে
উড়ে এসে বৃক্ষ কুঠিরে আশ্রয় নেয়
একটা কালো বাদুড়
মহুয়ার মাতাল গন্ধে
পৃথিবীর প্রেমে পরে যায় চাঁদ
নেমে আসে জমিনের বুকের আরেকটু কাছাকাছি
বুড়িগঙ্গার জল ভুল বুঝে
ভালবেসে ফেলে চাঁদকে
উচ্ছ্বাসে ফুলে ফুলে ওঠে তার দু'কূল
জানালার উড়ে যাওয়া আচলের ফাঁক গলে
ঢুকে যায় চাঁদের আলো
অর্ধাবৃত দম্পতি ভালবাসা ঘেঁটে
গভীর আবেশে ঘুমায়
অনাগত সন্তানকে বুকে চেপে
পাশের ঘরে প্রতিধ্বনি তোলে বৃদ্ধ পিতার দীর্ঘশ্বাস
অনিয়ন্ত্রিত বর্তমান তিনি সপে দিয়েছেন
নিয়ন্ত্রিত ভবিষ্যেৎর হাতে
তার জানালায়ও উকি দেয় চাঁদ
বৃদ্ধ ফিরে যান তিরিশ বছরের
পুরনো এক রাতে
তখন ভালবাসা ছিল পূর্ণ যুবতী
সারারাত ছবি এঁকেছেন প্রথম সন্তানের
বছর ঘুরতেই খোকা তার আগমন বার্তা
জানায় প্রথম ক্রন্দনে
ঝাপসা হয়ে আসে বৃদ্ধের দৃষ্টি
চশমার আরশিতে ধুলো জমেছে বুঝি
হঠাৎ তার সামনে উদয় হয়
আলো ঝলমলে এক তেইশ বছরের অপ্সরী
-'বার বছর ধরে তোমার অপেক্ষায় আছি'
ভীত চোখে বৃদ্ধ বুঝে নেয় এ তারই আরতি
-'চলে এস হাত ধর আমার'
মোহগ্রস্তের মত হাত বাড়িয়ে দেন তিনি
হঠাৎ ডানা ঝাপটায় একটা কালো বাদুড়
মহুয়ার মাদকতা ভুলে উড়ে যায়
দূরে বহুদূরে, অসীমের খুব কাছাকাছি

হুট করে চলে এস কোন এক দিন

হুট করে চলে এস কোন এক দিন।
তোমার অভিমানগুলোকে ফাঁকি দিয়ে,
রংধনুর আসমানি রং সাথে নিয়ে
শুভ্র মেঘের ভেলায় ভেসে,
শারদে আগমনী সুর তুলে।
চলে এস কোন এক দিন।
আমরা একটা বোহেমিয়ান জীবনের
আত্মসমর্পণ দেখবো সন্ধ্যার আলোতে।
সুখ তারার জেগে ওঠা
জোনাকির ম্লান আলোতে?
ঘাসফড়িঙ এর ঘরে ফেরা
দুব্বার ঠোটে চুমু এঁকে!
কথা দিচ্ছি অবাধ্য ঘুড়ির
নাটাই গুজে দেব তোমার হাতে।
হুট করে চলে এস কোন এক দিন!
দেখতে চাই আজও কি করে,
তোমার পায়ের শব্দে
ছলকে ওঠে রক্ত বুকের মধ্যে।

স্বরচিত কারাগার

মানুষের ভেতরে বাস করে
বেদে সাপুড়ে
বোহেমিয়ান জীবন বেছে নেয়া
অদ্ভুত ছেলে
কখনও চিরকুমার গ্রাম্য গায়েন
টগবগিয়ে ছুটে চলা আরবের বেদুইন
সুমেরু কুমেরু বিস্তৃত এ বিশাল কারাগারে
তবু মানুষ গড়ে তোলে জেলখানা
নিজেকেই বন্দী করে
শূন্য থেকে শূন্যতা চুরির দায়
কি করে বয়ে বেড়াবে....
কেউ বাঁচে স্বপ্নে কেউ শূন্যতায়
আর যার শূন্যতা টুকুও হারিয়ে যায়?
বিদায় বলে সামনে এগিয়ে যেতে যেতে
মুখ ফিরিয়ে দেখি
আমার ছায়াটি তার কাছেই বসে আছে...

শিশিরে যেন ভেজেনা চোখ

শব্দ খুন হোক
প্রতিটি শব্দহীন ক্ষনে
শিশিরে যেন ভেজেনা চোখ
মুক্তা ফোটেনা যেন সবুজের বুকে
নিঃশ্চুপ চুপচাপ
ধ্বনী প্রতিধ্বনী-হীন অথৈ সাগরে
নাবিক খোজে ঢেউ
গাংচিল উড়ে
ছেড়া মাস্তুল জুড়ে
শব্দ খুন হোক
প্রতিটি শব্দহীন ক্ষনে
ছায়া উড়ে উড়ে ছুয়ে যায়
ছুয়ে ছুয়ে দূরে যায়
শিশিরে যেন ভেজেনা চোখ
মুক্তা ফোটেনা যেন সবুজের বুকে
....এতদিন নিজের কষ্টগুলো বয়ে বেরিয়েছি....এখন রোজ রোজ সে তালিকায় যুক্ত হয় নতুন নতুন শব্দ....যদিও সবগুলোর একই নাম....তুমি... কষ্টে আছ তাই ভারী হয় আমার কষ্টের রোস্টার
বেঁচে থাকার জন্য হাজার হাজার বন্ধু, আত্মিয়, সম্পর্কের প্রয়োজন হয় না....একজন মানুষের অকৃত্রিম একটু উষ্ণতা, একটু ভালবাসা, ব্যস্ততার মাঝে ও দু দন্ড পাশাপাশি এসে হাতে হাত রেখে কথা বলা কখন যে বুকের মধ্যে বেঁচে থাকার নতুন চারা গাছ বপন করে দেয় তা বোধহয় মানুষ নিজেও জানে না। অবাক লাগে আমিও আজকাল স্বপ্ন দেখি....বেঁচে থাকতে চাই...কষ্টেরা আছে সেতো থাকবেই....আর মাঝেমাঝে হঠাৎ এসে ধরা দেয় এমন কিছু সম্পর্ক যারা বাঁচতে শেখায় হাসতে শেখায়...তখন নিজেকে বড় সৌভাগ্যবান মনে হয়....

শত শত হাহাকার ফিনিক্স

হেটে হেটে যেতে যেতে
পথে পথে কিংবা বিপথে মিলে যায় হঠাৎ জীবন
ক্ষণিকের জন্য মৃত্যুর অবসান
অস্থি মজ্জা মাংস নয় কোন এক অপরিচিত মানবী
মানবী নয় কোন মৎসকুমারী
বসন্তবৌরি হয়ত, কি জানি আমি জানি না
কোন জান্নাতুল ফেরদাউসের আসমান পাখি
অস্থি মজ্জা মাংস নয় -হৃদয়ের মালিকানা নিয়ে
মুসাফিরের চোখ জল অন্ধকার অতীত
সূক্ষ্ম কোন বোধ জন্ম নেয়। জন্ম নেয়? নেয়? নেয় না?
... কি জানি আমি জানি না
কষ্ট আর্টারী শিরা উপশিরা ধমনীতে যে অবরোধ
-অবরোধে ওড়ে শান্তির পায়রা
একটা একটা দুঃখ পাপ অপ্রাপ্তি
-অবহেলা ঘৃণা অন্ধকার
উড়ে যায় ঘাসফড়িঙ নীল প্রজাপতি
-মুনিয়া সবুজাভ টিয়া
পান্থশালায় ফুরায় গল্প, শেষ হয় সব উল্টানো পান পাত্র
সামনে ধু ধু মরুভূমি
স্পষ্ট থেকে স্পষ্টতর হয় সাইমুম ঝড়
চারিদিকে যুদ্ধের দামামা, শুধুই ধ্বংসের খেলা
একটু জিরিয়ে নেই? দু'দণ্ড চোখ বুঝে থাক ক্লান্তি?
মুসাফিরখানায় নিভে যায় শেষ বাতি
নেকাবে মুখ ঢাকে ঘোড়সওয়ার বেদুইন
আকাশে জন্ম নেয় শত শত হাহাকার ফিনিক্স

কবি

রোজ রোজ বেদনা আষ্টেপৃষ্টে
জড়িয়ে ধরে আমায়
আমাকে নাকি ভীষন পোড়াবে
অথৈ কষ্টের নীলে
আমি ভয় পাই না
শংকিত হই না মোটেই
ওরা জানে না কবি হয়ে উঠতে
কতটা কষ্ট বুক পেতে
স্বাগত জানাতে হয়
জানেনা কতটা দহনে
একটা কবির জন্ম হয়
যে শব্দের শরীর পরম যত্নে
তুলে দেই ধর্ষনের জন্য
তোমরা কি জান
তার পিতার বুকে কতটা হাহাকার
কতটা পুড়েছি বলে
আজ আমি শব্দের দালাল?
বেহুলার ঘরে যে কালকেউটে ঢোকে
তার নাম কি জান?
সে অবিশ্বাসে শেষ হয়
একটি গল্প
এভাবেই লেখা ছিল
তার সমাপ্তি
রেললাইন বড় অদ্ভুত জিনিস
সারাজীবন এক সাথেই চলে
কিন্তু নিজেদের মধ্যকার
ওই অল্পটুকু দূরত্ব কখনো অতিক্রম করে না
ভালবাসা জিনিসটা যতক্ষন পাশেপাশে হাটে চারদিকে একটা অপার্থিব শান্তি বিরাজ করে। আর যখন উল্ট পথে হাটে তখন দুটি জিনিস হয়। আপনার ভুলে যদি সে উল্ট পথ ধরে তো আপনি সারা জীবন আপসোস করবেন। আর যদি তার ভুলে হয় তো সারাজীবন জ্বলবেন। এখন এই সারাজীবনের ভেজাল থেকে মুক্তির পথ হচ্ছে আপনাকে অবশ্যই আবার ভালবাসতে হবে। তবে টাইম পাইস হলে চলবে না। তাহলে আফসোস এবং জ্বালা পোড়া ও টাইম মত ফিরে আসবে। আপনাকে বরং আরো বেশী সিরিয়াস হতে হবে। যেন এটা আপনার ভুল শুধরানোর সুযোগ। আর যদি জ্বালা পোড়ার ব্যাপার হয় তো অপটিমিস্টিক হয়ে ভাবতে হবে জগতে ভাল কিছুও আছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে এই ভালবাসাও যদি ব্যর্থ হয়? ধুর এত আগাম চিন্তা করেন কেন। কিন্তু কিন্তু করলে জীবনেও কিন্তু শেষ হয় না....
দুঃখে সবাই কাঁদবে সেটাই স্বাভাবিক....কিন্তু কিছু কিছু সুখ.... কিছু কথা.. কিছু একান্ত আপন মুহূর্ত চোখে জল এনে দেয়...আপনার এমন কখনো হয়েছে?....আমার এখন হচ্ছে.....স্বপ্নেরা বেচেঁ থাক যুগযুগান্তর শতাব্দীর পর শতাব্দী....এমন কি যখন আমি থাকব না তখন ও বেচেঁ থাক স্বপ্ন....এমন হঠাৎ পাওয়া আনন্দ অশ্রু.....ভালবাসি......
একটা দীর্ঘ দীর্ঘ সময় অবহেলায় কাটানোর পর ধীরে ধীরে আমার মধ্যে হীনমন্যতা বাসা বাধতে শুরু করল। কনফিডেন্স নামক যে বস্তুটি আছে সেটা মাইনাসের দিকে চলছে শুরু করল। আমি বুঝতে পারছি কোনটা ন্যায় কোনটা অন্যায়। কিন্তু আমার নিজস্ব মতামত ততদিনে গলা টিপে হত্যা করা হয়ে গেছে। মাঝেমাঝে ভাবতাম আমি হয়ত মানুষ নই। আমার চারপাশে একটা শামুকের খোল তৈরী হল। আর আমি হলাম শামুক মানব। সমাজ সংসার থেকে নিজেকে লুকিয়ে আমার বসবাস শুরু হল সেই খোলের মধ্যে। যেকোন ব্যাপারেই আমি আমার মতামত প্রকাশ করছি, ভালবাসছি, দুঃখ করছি, একাকীত্বের যন্ত্রনা সহ্য করছি, সবই করছি। কিন্তু সে শব্দ কারো কাছে পৌছায় না। কারন এর সবই হচ্ছে শামুকের খোলের মধ্যে। একটা দীর্ঘ মানুষিক আর শারীরিক যুদ্ধের পর আমার খোলসটা ভাঙ্গতে শুরু করেছে। এখনও কাজ চলছে পুরোপুরি সফল হতে পারিনি। অবহেলা বড় ভয়ংকর জিনিস। আপনি যখন এর শিকার হবেন তখন আপনার ব্যক্তিত্ব বিকাশ ভয়াবহভাবে বাধাগ্রস্ত হবে। তাই কারও অবহেলা অতি সাবধানে এরিয়ে যাওয়াই শ্রেয়। তাকে আঘাত করার প্রয়োজন নাই, জোর করে নিজেকে জাহির করার ও দরকার নাই। কিন্তু আপনি আপনার কৃতকর্মের জন্যই যে অবহেলার শিকার সে চিন্তা কখনোই মাথায় আনবেন না। আর আপনি যখন অবহেলা করার মত অবস্হানে থাকবেন, তখন কাউকে অবহেলা করার আগে নিজেকে একবার তার অবস্হানে দাড় করিয়ে দেখবেন। বিশেষ করে বাবা মা কখনোই আপনার সন্তানের চিন্তা চেতনাকে অবহেলা করবেন না। এতে তার যুদ্ধ করে বেচেঁ থাকার শক্তি হ্রাস পায়। সে অল্পতেই ভেঙ্গে পরে। বেশী আবেগী হয়ে ওঠে। সবসময় তার মনে হয় তাকে কেউ ভালবাসে না। মানুষ তার এই দূর্বলতার সুযোগ নেয় এবং সে বারবার প্রতারিত হয়। এমন নয় যে, সে বুঝতে পারে না যে তাকে প্রতারিত করা হচ্ছে। কিন্তু গুরুত্ব, স্নেহ পাওয়াটাই তার কাছে মুখ্য হয়ে ওঠে। এবং পরে আরও বেশী কষ্ট পায়। এটা রূদ্রর নিজের জীবনের থেকে নেয়া শিক্ষা। উফফ মনে হচ্ছে সাইকোলজি ক্লাসে লেকচার দিচ্ছি।

"আমি ভাল আছি"

আচ্ছা বলতো হয়েছে কি?
কলম খুঁজে পাচ্ছ না?
হাতের লেখা বিচ্ছিরি হয়ে গেছে বুঝি?
নাকি নীল খাম খুঁজছও?
সাদা হলে কি এমন ক্ষতি?
রাত জাগছ বলে মা খুব বকছেন আজকাল?
তাই বুঝি মন খারাপ?
দিনভর ঘুমিয়ে কাটিয়ে দিচ্ছ দিন?
ঘরকন্না ফেঁদে বস-নিতো?
জামাই বুঝি ভীষণ বদরাগী?
বাচ্চাগুলো কি দুষ্টের শিরোমণি?
এসব কিছুই নয়?
তবে দু'লাইন লিখতে কেন এত কিপ্টেমী?
আজকাল চিঠি লেখার চল নাই?
মোবাইল, এসএমএস, ইনস্ট্যান্ট ম্যাসেজ?
কিন্তু আমার যে একটা চিঠি চাই
-"আমি ভাল আছি"
কষ্ট করে এতটুকু লিখে দিও লক্ষ্মীটি....

কি চাই তোমার?

কি চাই তোমার?
বল কি আছে আমার
এমন অমূল্য তোমাকে দেবার?
নিতে চাওতো এই দুটি হাত নাও
ওতে শ্রমিকের শক্তি আছে
সেরে নিও তোমার দৈনন্দিন কাজ
নইলে এই দুটি চোখ নাও
ওতে আছে অজস্র অপূর্ণ স্বপ্ন
সাদা কালো ছায়াছবির মত
দেখে নিও কখনো মিললে অবসর
নিতে চাইছো তো আমার
শরীরের ঘ্রাণ নিয়ে যাও
ওতে মিশে আছে পুরুষের ঘাম
নইলে নাও যেটুকু আছে সঞ্চয়
কিনে নিও এক গোছা গন্ধরাজ
হাসছো কেন?
নিঃস্ব কবির এতটুকু-ইতো সম্বল
কি চাইছো তুমি?
সে আমি কি করে বল দেই?
ও ব্যাটা বড় নিমকহারাম
ও এখন আর থাকেনা
এ বুকের খাঁচায়
শুনেছি সে করছে পরনারীর সংসার
সে নারীর আছে স্বামী-সন্তান
ননদ, দেবর, শ্বশুর-শ্বাশুড়ী
কত শত সম্পর্কের কচকচানি
লোকমুখে শুনি সেই নারী
মাঝেমাঝে হঠাৎ মনে হলে
তার দিকে চেয়ে ফেলে চাপা দীর্ঘশ্বাস
মাসের বেশীরভাগ দিনই পড়ে থাকে অবহেলায়
তাই মাঝে মাঝে বলি
হে হৃদয়! ব্যাটা ফিরে আয়
এখনো ফুরায় নি সময়
কে শোনে কার কথা
শেষ খবর পেয়েছি সে নাকি
ব্যাপক বিবাগী
আপন তার যে কোন নারী
সবার মাঝেই সে খোজে
পুরনো ক্ষতের ছবি
তুমি নাহয় অন্য কিছু চাও
তুমি বরং আপাতত
নিরাশ্রয় মধ্যমা নাও
শক্ত হাতে ধরে রেখ
ও কিন্তু বড্ড অসহায়

তুমি ভালবাসলেই

তুমি একবার অবৃত্তি করলে
আমার কবিতা পায় অমরত্বের স্বাদ
তুমি ভালবাসলেই
সে গল্পে লেখা হয় ইতিহাস
তুমি পাশে থাকলেই
ভীষণ ভাল লাগে এ পৃথিবী
পছন্দের যা ছিল হারিয়ে ফেলেছি
জীবন নামের ধূর্ত বনিকের কাছে
সব হারিয়েছি বলেই
আকাশের শূন্যতা বাসা বেধেছে
আমার একাকীত্বের বুকে
অন্তত একবার তুমিও হারিয়ে ফেল
তোমার হৃদয়
পায়েলের ঝংকার তুলে
চলে এস আমার ভুবনে
তুমি একবার অবৃত্তি করলে
আমার কবিতা পায় অমরত্বের স্বাদ
তুমি ভালবাসলেই
সে গল্পে লেখা হয় ইতিহাস

কৃষ্ণ

রাধা তুমি ভাব আমার-
ভালবাসার বুঝি ভীষণ অভাব
আমিতো রোজ রোজ ভালবাসছি
নতুন করে
জগী হতে চেয়েছি আমি
লুটেরা বানিয়ে ছেড়েছ তুমি
এখন আর নারীকে খুঁজি না
খুঁজি তাদের ভেতরের নারীত্বকে
ভালবাসায় লাগে না তা,
শুধুই ভোগে লাগে
আমি এখন ভীষণ রকম ভোগবিলাসী
দেবীর পায়ে ফুল দেবার ছলে
পা ছুঁয়ে দেই খুব গোপনে
হয়ত একেই প্রেম বলে
তাইতো রোজ সাজি কৃষ্ণ বেশে
প্রয়োজন নেই সীতা তোমার অগ্নি পরীক্ষায়
মেনকা রম্ভা উর্বশীরা
ওরাই নাচুক বিষের বাঁশীর সুরে
এইতো বেশ
কৃষ্ণ হয়েই কাটুক
একটা জীবন বৃন্দাবনে

বিশ্বাসঘাতক নিঃশ্বাস

জীবন ফুরিয়ে গেছে সেই কবে
তবুও চলছে বিশ্বাসঘাতক নিঃশ্বাস
শীতের পাখিরা প্রতি বসন্তে
ফিরে যায় নীড়ে
পত্রঝরারা খুজে নেয়
কচি সবুজের প্রান
এ সবে আমার কি এসে যায়
আমিতো ফুরিয়ে গেছি
ভুল ভালবেসে

তুমি কি আমায় প্রশ্ন করবে?

এস এখানে এসে বস
অত দূরে নয়
আমার কাছে এসে বস
কি হয়েছে তোমার?
এমন আলুথালু বেশ
চোখ এমন পাগল পাগল কেন?
প্রচুর সিগারেট খাচ্ছ বুঝি?
সারাদিন কোথায় কোথায় ঘুরে বেড়ায়?
শেভ করনা কেন?
জামার বোতাম খোলা কেন?
তোমাকে কে নামিয়ে দিয়ে গেল?
এদিক সেদিক কি দেখ?
কি খোজ তুমি?
আমার দিকে তাকও
তুমি কবিতা লিখছ না?
তুমি কি ক্লান্ত?
ভাত খাবে?
ঘুমবে তুমি?
কিছু কি চাই তোমার?
আমি কি চলে যাব?.......