খুব ভোরে ঘুম ভেঙ্গে যদি দেখ
শূন্য বালিশ, আমি নেই পাশে
খুঁজবে না আমায় আর মিছেমিছে
রাখালের ঐ সরু মেঠো পথ ধরে
ছুটেছি তখন ভিন্ন জীবনের খোঁজে
এখানে চার দেয়ালের সংসার আছে
অহেতুক সুখী সুখী মুখ
নিজেকেই ফাঁকি দেয়া সঙ্গোপনে
যখন চারিদিকে নেমে আসে নিঝুম আধার
থেমে যায় জীবনের সব কোলাহল
কথোপকথন হয় একাকীত্বের পর্দায় চোখ রেখে
দেনা পাওনার হিসেব কষে
অহেতুক আঁকিবুঁকি সাদা কাগজে
তাই নাগরিক মঞ্চের পর্দা টেনে
ছুটে চলেছি ভিন্ন জীবনের খোজে
তুমি খুঁজে নিও সুখ চার দেয়ালের মাঝে
অথবা মুক্ত আকাশ বেছে নিও শঙ্খচিলের বেশে
অযথাই জড়ানো জীবন জটিল সমীকরণে
অবিরত খেলে যাওয়া সাজানো সংলাপে
স্পট লাইট নিভে গেলে
তুমি দেখেছো কি কোন হাসিমুখ
মেকআপের আস্তরণে?
পৃথিবী আজও তুলে দেয় খড়কুটো
সোনালী শালিকের ঠোটে
আজও আমাজন সুন্দরবন হয়ে আছে
সবচেয়ে বড় ঘর, একটাই সংসার
পুরো প্রকৃতি জুড়ে
চাঁদ আজও ভোলে নাই
জোয়ারের টান
নক্ষত্রেরাও মরে নাই
ঘুম ভেঙ্গে ঠিক ঠিক জেগে ওঠে
প্রতিটি সন্ধ্যা রাতে
ধ্রুবতারা আজও খোজে
দিশেহারা ভাঙ্গা মাস্তুলের নাবিকেরে
গায়ের বধূ যখন নিভায়ে দেয়
কেরোসিনের কুপি এক ফু'তে
জোনাকি তখনও জ্বলে কাশফুলের বুকে
নদী আজও খেলে যায় ভাঙ্গা গড়ার খেলা
পাখিরাও নীড়ে ফেরে শেষ হলে বেলা
ইহাদের ক্লান্তি নাই, আসে নাই
শত সহস্র বছরে
তুমি আমি কাঁধে তুলে নিয়েছি
এক নাগরিক বোঝা
আকাশ ছোঁয়া দালান কোঠা
আর ইস্পাতের সভ্যতা
কাঁচের দেয়ালে ঘেরা দামী রেস্তরা
কাঁচের বোতলে ভরা সুখ সুরীখানা
জীবিকার তাগিদে বেড়ে চলা পতিতা
তুমি আমি বেচি মেকি শিক্ষা
আত্মসম্মান চিন্তা চেতনা
নিজেদের বিকিয়ে কিনি নাগরিক সভ্যতা
তাই দিন শেষে ক্লান্তি এলে
নিজেকেই ফাঁকি দেয়া
ছেলে ভোলানো গান শুনে
সারারাত জেগে থাকা
আধো ঘুমে বুকভরা তৃষ্ণা নিয়ে