পৃষ্ঠাসমূহ


জনম জন্মান্তরের মিলনের স্বাদ

নক্ষত্র ফুল বিছায়ে আছে
আকাশের বুকের বাগানে
তবু আজ মেঘ হবে
অঝোর ধারায় নয়, বৃষ্টি হবে খুব ধীরে রয়ে সয়ে
যেভাবে বেদনার নদী বয়ে চলে ধীর পায়ে
বেদনার বড় ফুরিয়ে যাবার ভয়
তবে এই ধীর লয় আমার বড্ড জঘন্য লাগে
আমি অহর্নিশ ছুটে চলি দ্রুত থেকে দ্রুততর বেগে
দয়া করে প্রশ্ন করো না, কোথায় যাচ্ছি
কিংবা কোথায় যেতে চাই
সেখানে পৌঁছালে কি হবে, না পৌছলে কি ক্ষতি?
কারও কি পথ চেয়ে থাকবার কথা?
নাকি পথ চলাটাই আনন্দের?
আমি জানি না এসব কিছুই
শুধু মনে হয় আমি খুঁজে ফিরি তাকে
জনম জন্মান্তরের মিলনের স্বাদ
তার বুকে শান্তি ঘুম ভালবাসা আছে ঢেঁড়
যে ভালবাসা অপচয় করে ফেলেছি
ভুল পরাগের গন্ধ মেখে- তাকে ফেরাবার মন্ত্র
শেখা হবে না আর এ জীবনে
বৃথা চেষ্টার জলাঞ্জলি দিয়ে আমি-ভালবাসা খুঁজি না আর
আমি ছুটে চলি দ্রুত থেকে দ্রুততর বেগে
পৌছাতে হবে সেখানে, তার বুকে শান্তি ঘুম ভালবাসা আছে ঢেঁড়
ভয়ংকর সুন্দর, ঝর্ণার শীতলতা সবুজ ঘাসের কোমলতা
আহ! আমাকে পৌছাতে হবে-'মৃত্যু' তুমি কত দূরে....
নক্ষত্র ফুল বিছায়ে আছে
আকাশের বুকের বাগানে........

একাকীত্বের প্রহরী

আপনি যখন একাকীত্বে ভোগেন, তখন যে মানুষটির কথা সর্বপ্রথম মনে হয় বা বারবার মনে হয়, বুঝতে হবে সেই মানুষটি আপনার জীবনের, আবেগের, ভালবাসার অনেকখানি দখল করে আছেন।।

আমি খুব গোপনে ফিসফিসিয়ে শুধাই তুমিই কি সেই বরষা?



















আষাঢ় নিজের অস্তিত্ব জানান দিচ্ছে
জলতরঙ্গের মোহিনী কলরোলে
এমন শ্রাবণে আমার ভেতরে
জেগে ওঠে গোপন সত্তা
আমি প্রবল উচ্ছ্বাসে ছুটে যাই বারান্দায়
গ্রিলের ফাঁক গলে বাড়িয়ে দেই হাত-
হাত পেতে নেই বৃষ্টির জল
চোখ বুঝে গভীর আবেশে পরখ করি
ফোটায় ফোটায় জমে আছে কতটা মেঘের বেদনা
আমি খুব গোপনে ফিসফিসিয়ে শুধাই তুমিই কি সেই বরষা?
যে বর্ষার কথা বলেছিল রোদ্রিতা
বলেছিল-
'এক বরষায় আমরা দুজন খুব ভিজবো
হাতে হাত রেখে, ডুবে যাব দুজনার চোখে।
তুমি চাইলে আমার অধর ছুঁয়ে দিতে পার তোমার ওষ্ঠে।
সেদিন অধরসুধা পানে আমরা দুজন ভিজিয়ে দেব বর্ষাকেও।'
-'প্রলুব্ধ করোনা, সাধু পুরুষও ডাকাত বনে যায় এমন বরষার আমন্ত্রণে'
-'বড্ড অবুঝ তুমি। বোঝ না কেন ভিজিয়ে দেবে, নিভিয়ে দেবে বলেই তো এমন বরষার আগমন।'
-বরষা তো ভেজাবেই। বুঝিনি কি বলছ তুমি?
-ধ্যাত, কিছুই বোঝ না তুমি। বোঝ না কেন এমন বরষায় আমারও সর্বস্বান্ত হতে ইচ্ছে হয়!'
আমি প্রবল উচ্ছ্বাসে ছুটে যাই বারান্দায়
গ্রিলের ফাঁক গলে বাড়িয়ে দেই হাত-
হাত পেতে নেই বৃষ্টির জল
চোখ বুঝে গভীর আবেশে পরখ করি
ফোটায় ফোটায় জমে আছে কতটা মেঘের বেদনা
আমি খুব গোপনে ফিসফিসিয়ে শুধাই তুমিই কি সেই বরষা?

সম্প্রদান

উজার করে দেইনা বলেই উজার করে পাইনা। যে দানে সংশয় থাকে সে তো সম্প্রদান নয়। আর সংশয় মুক্ত দানেই প্রতিদান মেলে অনাকাঙ্খিত। তবে এমন দানে কেউ কেউ ঠকে ও সবচাইতে বেশী। তবু সে ঠকায় আত্মতৃপ্তি থাকে, শান্তি থাকে। সংশয় নিয়ে যা দেই তাতো গেল-ই সাথে রাতের ঘুমও হারাম হয়ে যায়।।

স্বপ্ন

মানুষ স্বপ্ন দেখতে ভয় পায় না। ভয় পায় সেই স্বপ্নের কাছে ধরা দিতে।।

রোমাঞ্চকর সময়

প্রেমের সবচাইতে রোমাঞ্চকর সময়, প্রেমে পরা আর প্রেম হওয়ার মধ্যবর্তী সময়।।

বন্ধু,একাকীত্ব

মানুষ বন্ধু নির্বাচনে সবচেয়ে বেশী ভুল করে যখন সে একাকীত্বে ভোগে।।

প্রতীজ্ঞা

যাদের কাছে প্রতীজ্ঞার মূল্য নাই, তারা অতি ক্ষুদ্র লাভের জন্যও অন্যের কাছে অনেক বড় বড় প্রতীজ্ঞা করে ফেলে।

প্রেম, বিয়ে

মেয়েরা পাগলের সাথে প্রেম করতে চায়, বিয়ে বসতে চায় পাগলের ডাক্তারের সাথে।
আর ছেলেরা বেশ্যার মত আচরনের মেয়ের সাথে প্রেম করতে চায়, বিয়ে করতে চায় কুমারী সতী।

সাইকেল

ঢাকায় হঠাৎ করে সাইকেলের খুব চল দ্যাখা যাচ্ছে। বেশীর ভাগই অল্প বয়সী স্কুলগামী, অসংখ্য তরুনও আছে। ফেসবুকে পেজও দেখলাম। দল বেধেঁ চলছেন অনেকে। ক্লাব হচ্ছে। ব্যাপারটা দেখতে খুব ভাল লাগে। তার কারন হচ্ছে আমিসহ অনেকেই সময় অসময়ে হেলমেট ছাড়া বাইক চালালেও এই সব সাইকেল আরোহী অনেকেই দিব্যি হেলমেট পড়ছেন, এমনকি অনেকে knee guard, elbow guard ও ব্যাবহার করছেন। হয়ত স্টাইলের জন্য তবে মোদ্দা কথা পড়ছেন এবং দেখতেও ভাল লাগে। তো সাইকেল ভাইরাস আমার বাসায় ও লাগলো। ছোট ভাই দুটির আবদার আমার কাছেই বেশী থাকে। সাইকেল কিনতে গেলাম বংশালে। শুনে আশ্চর্য হলাম ৬০/৭০ হাজার টাকার সাইকেলও দেশে তৈরী হচ্ছে এবং ইউরোপের বিভিন্ন দেশে রপ্তানীও হচ্ছে। শুনে গর্ব হল নিজেকে নিয়ে, দেশকে নিয়ে। যাই হোক সাইকেল কেনা হল। আমিও দোকানে যেতে হলে মাঝেমাঝে হুটহাট সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে যাই। যতবার সাইকেলে উঠি আমার নিজের সাইকেল চালানো শেখার কথা মনে পড়ে যায়। আমার বাসায় একটা সুনাম আছে ছোটবেলা থেকে। আমি কারও কাছে কিছু আবদার করি না। আসলে নুন আনতে পান্তা ফুরায় এমন পরিবেশে আবদার মানে অত্যাচার। ছোট্ট আমি কিভাবে যেন সেটা বুঝে গিয়েছিলাম। বাসার কারও কাছে কখনো মুখ ফুটে কিছু চাওয়া হয়নি। অভ্যাসটা এখনও আছে। কারও কাছেই মুখ ফুটে বলতে ইচ্ছা করে না এটা দাও, ওটা চাই। কেউ যদি আমাকে বুঝে নিজেই এগিয়ে আসে তখন আমি খুশিতে এ্যাবনরমাল হয়ে যাই। তো আমাদের দোতালায় যে ফ্যামিলিটা থাকতো ওরা ছিল দুই বোন এক ভাই। এক ভাই এক বোন আমার থেকে বড় আর এক বোন ছোট। সহানুভূতি হোক আর আদর নামটা যাই হোক আমার কখনো অভাব হয়নি ছেলেবেলায়। তো ছোট বোনটার একটা সাইকেল ছিল। আমি ওর কাছ থেকে সাইকেল শিখতাম। বিকেলে স্কুল থেকে ফিরে দেখতাম ও সাইকেল চালাচ্ছে। আমি চালাতে চাইলে দিত তবে শর্ত হচ্ছে ওকে কমিক বই এনে দিতে হবে। বই না থাকলে no সাইকেল। তখন চাচ চৌধুরী পিংকী কঁচি কাঁচার নেশার বস্তু। এক পিস ১৫ টাকা। টাকাতো নেই। স্কুলে অন্যরা তখন এ ওর সাথে অদল বদল করে কমিক পড়ে। আমার কাছে বই নেই তাই অদল বদলের সুযোগ নেই। তবে কেন যেন অনেকেই বই দিত পড়তে। আমি সেই বই দিতাম মেয়েটাকে। তো সব দিন বই আনতে পারতাম না আর সবদিন শেখা ও হত না। আবার মাঝে মাঝে ও নিজে থেকেই দিত। বই নেই বললে বলতো লাগবে না। আসলে মায়ের জাত তো কতক্ষন আর নির্দয় হয়ে থাকবে। কিন্তু যার জন্য সাইকেল চালানো শিখলাম তার নাম আজ আর মনে নেই। ও দুই বেনী করত আর ফ্রক পরতো। এক সময় আমাদের বাসা বদল হল। আজ ওরা কোথায় জানি না। তবে সাইকেলে চড়লেই আমার সেই সময়ের কথা মনে হয়। হয়ত এটাও একধরনের প্রেম যার মূল চরিত্র সাইকেল আর কমিক বুক। তখন চাওয়া পাওয়া গুলো ক্ষুদ্র ছিল, সহজেই হিসেব মিলে যেত। যতদিন যায় কোন সম্পর্কের হিসেব আর মেলে না। যোগ করতে যেয়ে বিয়োগ করে ফেলি, বিয়োগ করতে যেয়ে ভাগ, হাতে কত ধরা ছিল ভুলে যাই। তবে একটা জিনিস বুঝতে পারি অতীতের সব কষ্ট, সব সময় কষ্ট দেয় না, কিছু কষ্টকে মনে করতেও মাঝে মাঝে ভাল লাগে।

অনুভূতি

কিছু অনুভূতি প্রকাশ করলেই ফিকে হয়ে যায়। অনুভূতিটা যে তীব্র ঝড় তুলছিল প্রকাশ হয়ে পড়তেই কেমন থিতিয়ে যায়। কিছু অনুভূতির তাই যাবতজীবন কারাদন্ডই শ্রেয়।।

পূর্ণতার কাছাকাছি

মানুষ যে কোন বিষয়ে যত পূর্ণতার কাছাকাছি যায়, সে বিষয়ে তার আত্মতৃপ্তি তত হ্রাস পায়...

ভালবাসায় দুজন মানু

ভালবাসায় দুজন মানুষ একই সাথে সুখী হতে পারে না। একজন সুখী হলে অপর জন অবশ্যই দুঃখে থাকবে...দুজন একই সাথে সুখী হওয়ার ব্যাপারটা বিরল.....

মরুভূমি শুষ্কতা

বৃষ্টি হারিয়ে ফেলেছে তার সহজাত
ভেজানোর ক্ষমতা
এবারের বর্ষার ঘন বরষার জলে
শুধুই মরুভূমি শুষ্কতা....

রাগ আর মন খারাপ

ভীষন মন খারাপ কারও মন কিছুতেই ভাল না হলে তাকে রাগিয়ে তুলতে হয়। রাগ আর মন খারাপ এক সাথে থাকে না। রাগ হলে দুঃখ পালিয়ে যায়।

খুটিয়ে খুটিয়ে দেখবে

মেয়েরা পরিচয়ের প্রথম দিন থেকেই আপনাকে খুটিয়ে খুটিয়ে দেখবে। কিভাবে কথা বলে, কিভাবে হাসে, কাপড় চোপড় কেমন even চুলের সিথি কিংবা আঙ্গুলের নোখ। সব details। অবশেষে কিছুদিনের মধ্যেই সিদ্ধান্ত পাকাপোক্ত হয়ে যায় আপনার সাথে তার সম্পর্ক কেমন হবে। বন্ধু, দোস্ত, হ্যালো হাই বাই, ভাই, ভালবাসা। আর এই সিদ্ধান্ত থেকে বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই সরে আসবে না।

যাচ্ছি ভীষন বদলে.

টিক টিক করে ঘড়িটি রোজ রোজ যায় বলে
তুমি আমি যাচ্ছি ভীষন বদলে....

বড় নেশা

ভালবাসাই নাকি সবচাইতে বড় নেশা.....তবে সব নেশাই একসময় কেটে যায়....আর আসক্তি থেকে মুক্তি পেয়ে কেউ সে নেশায় ফিরে যেতে চায় না ভয় পায়...তাই হয়ত আমরা দ্বিতীয়বার ভালবাসতে পারি না....

সুখ

সবাই সুখের জন্য প্রেম খোজে, প্রেম মেলে সুখ মেলে না। ভাল থাকার জন্য ভালবাসা খোজে, ভালবাসা মেলে, ভাল থাকা হয়ে ওঠে না।

বিরক্ত

কেউ বিরক্ত করলে মেজাজ খারাপ হবে সেটাই স্বভাবিক। তবে যে নিয়মিত বিরতীহীন বিরক্ত করে যাচ্ছে সে হঠাৎ করে বিরক্ত করা বন্ধ করে দিলে কেন বারবার মনে হয় সে কেন আর বিরক্ত করে না? সে কি অসুস্হ, সে কি আর আমাকে পছন্দ করে না? তারমানে বিরক্ত করেও মানুষের মনের মধ্যে জায়গা তৈরী করা যায়?

অমূল্য রতনহার

না চাইতেই যা দিয়েছ
সেটুকুই অমূল্য রতনহার
চেয়েও যা পাইনি
তার নাম হাহাকার.....

তীব্র আকাঙ্ক্ষা

তীব্র আকাঙ্ক্ষা পূর্ণতা না পেলে পরিণত হয় তীব্র বিতৃষ্ণায়। সে বিতৃষ্ণায় মানুষ নিজেও পোঁড়ে আসে পাশে যারা থাকে তাদেরও পোঁড়ায়।।

বলতে শরম লাগে আমি আসলে ধ্বজ

আড়ং এর উপরে সপ্ত জান্নাত। নিয়মিত Dating মারা ভাই Salman Rahman Dedar বলতো ভাইয়া চরম জায়গা একদিন যাইয়েন। আজকে প্রথম গেলাম। সামনে বিশাল মানিক মিয়া এভিনিউ। চারিদিকে ব্যাস্ততা, শব্দ কোলাহল, মানব, যান্ত্রিক দানব। আর আমি অনেক উপরে আকাশের কিছুটা কাছাকাছি। সাথে প্রিয় Ra Eahsan। সংসদ ভবন বিল্ডিটাকে সন্ধ্যার আলো আধারিতে চমৎকার লাগছিল। দেখতে দেখতে মনের মধ্যে একটা চিন্তা ঝিলিক দিয়ে গেল। গল্প করতে করতে আর photography lesson নিতে নিতে চিন্তাটা দানা বাঁধতে পারলো না। বাসায় ফিরছি একা একা তখন আবার চিন্তা এল। সংসদ ভবন এত সুন্দর স্হপত্য এর ভিতরে কিলবিলে কিছু মানুষ। দেশটাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে আর আমরা, তুমি, আমি হা করে দেখছি। তবে আর যাই হোক রাজনীতি করবো না। বড্ড বাজে জিনিস। আর রাজনীতিবিদ!! ছ্যা মানুষ নাকি একটাও। আমিতো আমি আমার নাতি পুতির পুতি ও জানি এই রাস্তায় না যায় ব্যবস্হা করা দরকার।

ছোট্ট বাচ্চাটা ধর্ষিত হল। ধর্ষকের ছবিও দেখলাম। বাচ্চা একটা ছেলে। আর ধর্ষকতো আমার মত শিক্ষিত না। এরা তো এই সব করবেই। আমি সচেতন নাগরিক ফেসবুকে পোস্ট দেই, কমেন্ট করি লাইকও দেই। দুই চার দিন যাক সব ঠান্ডা হয়ে যাবে। আর মাঝে মাঝে এই সব না হলে চলে? আড্ডা মারার একটা বিষয় তো চাই। তর্ক বিতর্কে পশ্চাদেশ গরম। ধর্ষিতা আর ধর্ষক আমার বোন ভাই না হলেই চলে। কে করলো, কারে করলো, কেন করলো, আসল সমস্যা কই এই সব আমার না ভাবলেও চলে।

হেফাজত, শিবির, যুদ্ধঅপরাধি কত কিছু হয়ে গেল, কত কিছু হচ্ছে। ইসলামের চৌদ্দ গুষ্টি পারলে কবর থেকে তুলে এনে ফাঁসি চরানো হচ্ছে। কেউ দাড়ি টুপি পরে অন্যায় করলো তো দোষ ইসলামের। বিয়ে কয়টা করলো সে দোষ মোহাম্মদের (স:)।
আমি অবশ্য ঠিক আছি। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ি না, মাইয়া মানুষরে গা ঢাকতে বলি নিজে চোখ নামাই না। জুম্মাবারে গোসল, আতর মাখি নামাজ শেষে ভাত খাইয়া দিবা নিদ্রা। আমার নিজের ইসলাম কিন্তু ঠিক আছে।

সাভার, বাজেট, রাজনীতি, সুন্দরবন, আজকে শুনি ব্রক্ষ্মপুত্রে বাঁধ আরও কত কি বাল ছাল আজাইরা ক্যাচাল। চলতেছে চলুক। আমার কি? কিছু ঘটলে, সবাই করে আমিও আহু উহু চুক চুক করে চালিয়ে যাব। আমার পেটে ভাত আছে, মাথার উপর ছাদ আমার নেটের লাইনও আছে। আর কি কিছু চাইতে পারি। যার যা খুশি হোক। আমার মত আমার চললেই হল। খালি একটা কথা বলতে শরম লাগে আমি আসলে ধ্বজ। কিছু বদলানোর ক্ষমতা নাই। ভিতরে আগুন নাই, ওই ধর্ষকের মত আমার খাড়ায় না। ও তো আমার চেয়ে ভাল নিজের ভেতরের পশুটাকে বাইরে আনতে পারে। আমি শিক্ষায় ভদ্রতায় মিউ মিউ করি। আর মন ভাল করতে আড়ং এর উপরে সপ্ত জান্নাতে ঘুরি।।

পুরনো হয়ে গেছে এই শহর



















পুরনো হয়ে গেছে এই শহরের শরীর
বার্ধক্যে জরাজীর্ণ এর সকল প্রাণ
চোখে চালশে ধরা
ভাল কিছু চোখে পরে না
ওষ্ঠে ষাট বছরের বৃদ্ধের 
শেষ বার জ্বলে ওঠা কামনার লালা
শিরা উপশিরা গুলো দৃশ্যমান 
কোটি কোটি ক্যান্সার আক্রান্ত রক্ত কণিকা
পাকস্থলী ভরা বুদবুদ গ্যাস
পয়ঃনিষ্কাশনের যাচ্ছে তাই অবস্থা
ভেঙ্গে গুড়িয়ে চলছে থাই গ্লাস সিরামিক ইটের চাষবাস
নিয়ন হারিয়ে গেছে এখন এনার্জি সেভিং এর টাইম
আমরাও সংরক্ষণ করে চলেছি
বন্ধুত্ব প্রেম ভালবাসা সততা
-সহমর্মিতা মনুষ্যত্ব 
এ সবই সংরক্ষিত জাদুঘরে তোলা
দিন দিন এই বৃদ্ধ শহরের বুকের লোম
সাদা হয়ে ,হয়ে যায় বিবর্ণ ধূসর
রোজ রোজ চলে হেয়ার রিপ্লেশমেন্ট লেজার সার্জারি
শহরের সবই চলে ধুকেধুকে 
এক পা দু পা করে
শহরে বদলে নিচ্ছে রূপ পুনর জনমে
শুধু বন্ধ মানুষ তৈরির কারখানা

শূন্যতায় ফিরে যাচ্ছি তোমার ছায়ার হাত ধরে



ডক্টর,

সব মানুষেরই এমন একজন থাকা দরকার যাকে কারনে অকারনে বিরক্ত করা যায়। সময় অসময়ে ডেকে এনে বলা যায়-'শোন আমার ভীষন মন খারাপ। তুমি আমার সাথে একটু আজাইরা প্যাচাল পারবা? তারপরও যদি মন ভাল না হয় তাইলে হুদাই ঝগড়া কইরা আমার মন ডাইভার্ট করে দিবা। পারবা না?' আমি মুখচোরা স্বভাবের মানুষ। সহজে কারো কাছে আমার খোলস খোলে না। আমি হইলাম শামুকমানব। আমার বন্ধুমহল দিন দিন যত সংখ্যায় বাড়ে অনুপাতে খোলস খোলার মানুষের সংখ্যা তত কমে। তুমি কেমনে জানি খোলস খুলে ফেলছ। এখন আমার ইচ্ছা করে কারনে অকারনে তোমাকে বিরক্ত করতে। ইচ্ছা করে কান ধরে বলি-'এই তুই এখন ব্যস্ত কেন? ব্যস্ত থাকতে পারবি না। আমার সাথে গল্প কর।' কিন্তু আমিতো ভাল গল্প করতে পারি না। একটু একটু কবিতা লিখতে পারি। আচ্ছা গল্প শেষ হয়ে গেলে লুডু খেলা যায়। নইলে বালিশ ফাইট। নইলে চুপ করে বসে থাকি? ডক্টর শূন্য থেকে উঠে আসা যতটা কষ্টের শূন্যতায় ফিরে যেতে আরও বেশী কষ্ট হয়। কারন ফিরে যেতে হয় একা। আজকে একজন চলে গেল। বলে গেল দাদা ভাল থাকিস। আমার মধ্যে অদ্ভুত একটা ব্যাপার আছে কেউ বেশী ভালবাসলে আমি দিশেহারা হয়ে যাই। কি করব বুঝতে পারি না। বেশী তৃষ্ণায় পানি যেমন গলায় আটকে যায় এমন একটা ব্যাপার। ডক্টর অসুস্থ হলে চলবে কেন? মোটেই চলবে না। রোগী দু'চারটে মরে তো মরুক। ডক্টর আমি ভাল আছি। আমি একা নই। শূন্যতায় ফিরে যাচ্ছি তোমার ছায়ার হাত ধরে। ভাল থেক তুমি।

-রুদ্র বাবু

পূর্ণতার অপেক্ষা













সারাদিনের ক্লান্তি অবসাদ
এক জীবনের অপূর্ণতা প্রার্থনা
আকাঙ্খা ব্যর্থতা অনুশোচনা
না বলা কথা, নাম ঠিকানা বিহীন চিঠি
অনেক অনেক গল্প 
রচিত এক খন্ড আকাশ
ভেসে যাওয়া মেঘের অভিমান অভিলাষ 
মনের দেয়ালে দেয়ালে আঁকিবুঁকি কাটাকাটি
এক মাথা এলোমেলো চুল
নিয়ে পাখিটি ঘুমিয়ে গেল 
শিয়রে বসে রইল 
আধখানা স্বপ্ন -পূর্ণতার অপেক্ষায়

বকুলফুল













বকুলফুল তুলে রাখ
নীল খামের ভাজে
তুমি ভাল থাক বকুল ফুল
মুমূর্ষ হয়ে বেঁচে থাকা
সার্কাসের দড়ি বেয়ে হাটা
কিছু মুহূর্তের প্রলোভন
দ্বিধা হাতছানি অহেতুক শর্তারোপ
আকাঙ্ক্ষা সুখে থাকা
কাঁচফুল ঘাসফড়িং আবোলতাবোল অযথা
বকুলফুল বৃষ্টিতে ভিজে যদি যায়?
কি দরকার অহেতুক
শূন্য যোগ শূন্য
বৃষ্টিতেই ভিজবো ভীষণ
বকুলফুল তুলে রাখ
নীল খামের ভাজে
তুমি ভাল থাক বকুল ফুল
দ্বিধা দ্বন্দ্ব ঝেড়ে ফেল
আমার নাহয় নাইবা হল
ঝুমঝুম ছাতি মাথা আলিঙ্গনের বৃষ্টি ভেজা
চোরা কাটা ভেসে ভেসে
আটকে যেতেই পারে
ঝেড়ে ফেলেছ মন্দ নয়
নয়তো চুপসে শরীরে জড়িয়ে যেত
আগামী বরষায়
বকুলফুল বৃষ্টিতে ভিজে যদি যায়?

হ্যালুসিনেশন




ছিটে আসা ছিট ছিট কাদা

না, একটা দীর্ঘ শান্তির ঘুম না

পদ্ম পাতার জল ক্ষনস্হায়ী

গড়িয়ে পরে কতটুকু ভেজায় মাটি?

ভেজায় না? শান্তি নেই সে জলে?

সত্যজিৎ ভদকা সত্যজিৎ

তিলোত্তমা নিরাপদ আশ্রয়

রাজবাড়ী রাজরানী

আর্য অনার্য যারই সন্তান 

সৃষ্টির ভাঙ্গা গড়া ধ্বংস প্রলয়

মাথায় এক দূর্বোধ্য হ্যালুসিনেশন

ঘুম ঘুম ঘুনে পোকা

কতদূর জল জল অথৈ জল?

ডাকবাক্সে তোমার ঠিকানা বিহীন চিঠি

কবিটাকে খোজে

কবি মানুষ হতে চেয়ে

হয়ে ওঠে রোজকার পুরনো মাতাল

ছিটে আসা ছিট ছিট কাদা

না, একটা দীর্ঘ শান্তির ঘুম না

রোদ্রিতা আমি ঘুমাইনি

বহুদিন বহুবছর বহুযুগ

মাথায় এক দূর্বোধ্য হ্যালুসিনেশন

ঘুম ঘুম ঘুনে পোকা

দীঘির জল




মনে হয় বক্ষে একটা ভারী পাথর বাধিয়া একটা মস্ত বড় দীঘির জলে ডুবিয়া যাই। দীঘির জল হইতে হইবে সবুজাভ আর তার চারপাশে প্রচুর নারিকেল গাছ। নারিকেল গাছের ছায়ায় সেই দীঘির জল বার মাস শীতল থাকিবে। আর সূর্যের আলো নারিকেল গাছের চিরি চিরি পাতার ফাঁক গলিয়া আসিয়া প্রতি প্রভাতে চুমিয়া যাইবে দীঘির জল। একটা মস্ত বড় বাধানো ঘাট থাকিতে হইবে। আমি দীঘির জলে ডুবিয়া যাইবার পর আশেপাশের মানুষ দীঘিতে আসিবে শুধু সন্ধ্যার আগ পর্যন্ত। চারিদিকে তখন এ দীঘি হইবে এক ভূতুড়ে দীঘি। বাচ্চাদের গোসল করাইলে তাহাদের জ্বর হইবে আর কুমারী মেয়েরা জলে নামিলে তাহাদের আর সম্বন্ধ আসিবে না। কিন্তু ঐ যে মস্ত বাধানো ঘাট, প্রতি সন্ধ্যায় তুমি আসিয়া সেইখানে বসিবে। আর নিজের মনে আবোলতাবোল যা হয় বকাবকি করিবে। আমি চুপ করিয়া শুনিব আর হাসিব কিন্তু জবাব দিব না। কোন একদিন যদি ইচ্ছা হয়তো আমার মেয়েটাকেও সাথে করিয়া নিয়া আসিও। তাহার দুই বেণী করিয়া দিও আর একটা নীল ফ্রক পরাইয়া দিও। আর অবুঝ মেয়েটা আমার কথা জিজ্ঞাস করিলে বলিয়া দিও-'বাবা তোমার জন্য মুক্তা খুঁজিতে দীঘির জলে নামিয়া গেছে, খুঁজিয়া পাইলেই ফিরিয়া আসিবে।'

চিলেকোঠার আধার



চিলেকোঠার ঘুটঘুটে অন্ধকারে আটকে আছে শ্বাস
সিঁড়ি বেয়ে উঠতে গিয়ে ক্লান্ত হয়ে বসে পড়ি সিঁড়ির বুকে
অতীতে হেলান দিয়ে গুটিয়ে নেই বর্তমান
বসে বসে খেলি প্রিয়তম আধারের সাথে
ঘুলঘুলির চোখ ফাঁকি দিয়ে ঢুকে যায় রোদ্রিতা
কালি গোলা আধারে চোখে ধা ধা লেগে যায়
নীরব প্রশ্ন- 'ফের খেলছো তুমি আধারের সাথে?'
আমি আহত চোখ তুলে তাকাই
পড়নের শাড়ীটি গোধূলি সূর্যের সোনালী
রোদ্রিতার চোখদুটি টকটকে লাল
উত্তর প্রশ্ন হয়ে প্রতিধ্বনি তোলে
-'তুমি কেঁদেছ সেই বনভূমিতে বসে?'
ছলছল চোখে হেসে উঠে সে
ধরা পরে যাওয়া হাসি
আমি হাত বাড়িয়ে বলি-'আস, কাছে আস।'
রক্তিম সূর্যটা হারিয়ে যায় ধান শালিকের দেশে
আর চিলেকোঠা ভরে যায় ক্লান্তিকর আধারে

ব্যাকুলতা





গোধূলি লগনের এ আধার আলোয়
বোঝা যায় না তার রং
হবে যে কোন একটা
হলুদ হয়ত, হয়ত বাসন্তী শরীর
পাঁচ তালার গ্রিলে ঝুলে ঝুলে দুলে যায়
বৈশাখের পাগলা বাতাসে আকাশে উড়ে যেতে চায়
মানবীর শরীরে জড়িয়ে থেকে থেকে
এই গোধূলি লগ্নে সেও পেয়ে গেছে মানসীর মন
হয়ত মুক্তি চায় ছিঁড়তে চায় কোন বন্ধন
পায়ে যার জড়িয়ে আছে সম্পর্কের শিকল
হয়ত কোন দুঃখবোধ নয়, হাহাকার নয়, নয় বিষণ্ণতা
হয়ত শুধুই একটা মানুষের ঘরে ফিরবার ব্যাকুলতা
কি জানি ছাইপাঁশ এ সব কিছুই নয়
তাঁতির নিখুঁত কারিগরি শুধু, শুধু পাঁচ তলার গ্রিলে ঝুলে থাকা
হলুদ, বাসন্তী কিংবা যে কোন রংয়ের একটা শাড়ী
আমার শুধুই মনে হয় শাড়ী নয়
ভীষণভাবে রক্ত মাংসের কোন রমণী
গোধূলি লগনের পাগলা বৈশাখী বাতাসে
যার মনে চলছে আমার মনের ঝড়

অবচেতনে স্বপ্ন জলপরী

তোমাকে ঠিক ঠিক চিনে ফেলেছি
এ ভাবনা শেষ করে তাকিয়ে দেখি
আমার পাশে বসে আছে আজন্ম অপরিচিত এক মানবী
তুমি কে প্রশ্ন করতেই
তার ঠোঁটে ভেসে উঠে হারিয়ে যায় বিষন্ন হাসি
জল ছলছল দু'টি চোখেও হাসি
সে হাসিতে শুধুই বিষন্নতার সুর
আমি স্বপ্নঘোর ভেবে হাত বাড়িয়ে ছুয়ে দেখি শূন্যতা
সে তখন নেমে গেছে জলের বুকের কাছে
হাত ইশারায় বলে দিল নেম এস শীতলতায়
আমি ধীরে ধীরে নেমে যাই
তলিয়ে যাই এক গভীর ঘুমে
আর অবচেতনের গভীরে শুনতে পাই
জলডানায় উড়ে উড়ে বহুদূরে হারিয়ে যায়
মানবী কিংবা একাটা জলপরী


তুমি আমাকে মুক্তি দাও

অপেক্ষার প্রহরের প্রতিটি ক্ষনে
আমার হৃদয়ে নেমে আসে মৃত্যু
প্রতিটি কোষ হয়ে যায় নিঃস্প্রান
তুমি ফিরে এসে যাকে খুজে নাও
সে আমি নই, একটা ক্ষুদার্থ পিশাচ
যার চাহিদা আশা আকাঙ্খা বদলে
নিজেকে প্রতিনিয়ত এগিয়ে নিয়ে যায়
ধ্বংসের দ্বার প্রান্তে
তুমি কেন পার না
কেন মাতৃত্বের শাসনে বলতে
... পারো না 'আর পাগলামী করনা'
কেন শক্ত করে আমার হাত ধরে টেনে
নিয়ে আস না গিরিখাদের শেষ প্রান্ত থেকে
কেন কেন কেন আমাকে বল না
'আর নিজেকে পুড়িও না শশ্মানে
এবার তোমার ঘরে চল'
ঘরোয়া অ-ঘরোয়া রাজনীতিতে পরাজিত আমাকে
তুমি কেন বলনা 'এসবে কিছু যায় আসে না
আমি আছি তোমার পাশে'
তুমি কি পারনা খুব ভীষনভাবে
একবার বুকে জড়িয়ে ধরতে
পারনা আমাকে মুক্তি দিতে
তবে কেন আমি অবিরত তোমার কাছে চাই দুটি বিহঙ্গ ডানা
তুমি আমাকে মুক্তি দাও মুক্তি দাও মুক্তি দাও
আজন্মের অভিশাপ হতে

নিঃস্প্রানকে কেউ যোগায় না সঞ্জিবনী

লন্ডভন্ড করে দিতে মন চায় সব ধ্বংস
সব ধ্বংস করার ক্ষমতা নাই
তাই রোজ নিজেকে পোড়াই
সবইতো বাল ছাল ছাই ভস্ম
তুমি আর কি করবে
গঙ্গায় ভাসিয়ে দাও
তারপর চলে যাও চলে যাও
দূর দূর বহুদূর
পিছন ফিরে তাকিও না আর
আমিও ভেসে ভেসে
যাব কত দূর কোন সে কূলের ঠীকানায়
কোন সে শশ্মানের ঘাটে
সে আমিও জানি না
শুধু এতটুকু জেনে গেছি
নিঃস্প্রানকে কেউ যোগায় না সঞ্জিবনী

দূরত্ব

দূরত্ব জিনিসটা বড় অদ্ভুত, অজান্তেই হঠাৎ করে তৈরী হয়ে যায় যোজন যোজন দূরত্ব। আর সবচাইতে খারাপ ব্যাপার হচ্ছে একটা সময় অনেক চেষ্টা করেও সেই দূরত্ব আর অতিক্রম করা যায় না। স্কুল জীবনের অনেক বন্ধুর সাথে দীর্ঘদিন পর দেখা হলে অদ্ভুত লাগে। মনে করতে পারি না ওকে তুই বলতাম না তুমি বলতাম। দূরত্ব জিনিসটাকেই হয়ত আমি সবচাইতে বেশী ভয় পাই। কখন কিভাবে সম্পর্গুলো ধ্বংস করে দেয় টেরও পাওয়া যায় না। হঠাৎ করে অনেক অনেক দিন পরে বোঝা যায় বুকের মধ্যে দূরত্ব তার ধ্বংসযঙ্ঘ চালিয়ে একটা শূন্যতার ক্ষত তৈরী করে ফেলেছে আর সে শূন্যতা কখনো পূর্ন হবার নয়-রুদ্র অনির্বান

এত কিছু চাইনি আমি

এত কিছু চাইনি আমি
চেয়ে ছিলাম আরও কিছু কম
একখানা দরজা আর
একটুখানি নিকনো উঠোন
 লাল বৌয়ের চোখের মায়া
 মায়ের আচলের একটু ছায়া
 ঘামে ভেজা শরীরে
 ঠাণ্ডা দীঘির জল
 ভাতের পাতে দু'টো কাচা মরিচ
 আর একটু খানি ঝোল
 এত কিছু চাইনি আমি
 চেয়ে ছিলাম আরও কিছু কম
 ঘরে ফেরার দেরিতে
তোমার উদ্বিগ্ন দৃষ্টি
 আর বাবার আদরের বকুনি
 ভাইগুলোর আবদারের জালাতন
 এত কিছু চাইনি আমি
 চেয়ে ছিলাম আরও কিছু কম
 তোমার আমার ভালবাসার
 একখানা ছোট সংসার

এক ফালি চাঁদ

অতঃপর পৃথিবীর পরে নেমে আসে
একাদশীর আধখানা চাঁদ
জ্যোৎস্না ছড়িয়ে দিয়ে
চেয়ে থাকে টলটলা পুকুরের জলে
পায়রার বকবকুম স্বরে
খসে যায় অভিমানী তারাগুলো
আকাশের বুকে জেগে রয়
খালি এক ফালি চাঁদ
বাতাসে ঝরে যাওয়া আমের বোলের
বেদনা বুকে নিয়ে চেয়ে রয় নীরবে
পথিক ধীরে এসে বসে ধানের শিষের পাশে
বুকে তার পথ হারাবার ব্যথা নিয়ে
চেয়ে রয় আকাশের পানে
এক ফালি চাঁদ বুকে জড়িয়ে নেয়
পথিকের বেদনার জল মুছে দিয়ে
বাতলে দেয় নতুন পথের সন্ধান
ক্লান্ত পথিক উঠে দাড়ায় ধীর পায়ে
চাঁদের আলোয় খুঁজে নেয় আপন ছায়া সঙ্গীরে
অতঃপর এক ফালি চাঁদ হারায় অজানায়
পৃথিবী কভু তারে খুঁজে পায় নাকো আর

ভাঙ্গা সংসার

যখন গিয়েছি চলে
নিস্তব্ধতা আর চাতকের ব্যথা নিয়ে
ভাঙ্গা উঠান, ভাঙ্গা সংসার ফেলে
বহু বছরের তরে একে অপরকে ছেড়ে
মলিন মুখ, ঠাণ্ডা হৄদয়
সত্যিই সেই সময় বিষাদ ছুঁয়েছে আমায়
সকালের শিশির হয়েছে কান্নার জল
কি যেন হারিয়ে গেল জ্বালিয়ে অনির্বাণ
সব চাওয়া আহত প্রজাপতির ডানা
টিম টিমে আলোয় সারাটা পথ চলা
শুনতে পাই সেই প্রিয় নাম
হাহাকার ওঠা পাতা ঝরা গ্রাম
শুক্লা পক্ষে ফিরে এস প্রিয়
হাজার বছর পরে এই ভাঙ্গা সংসারে
আমরা আবার মিলব নাহয়
মেঘের ওপারে।

বেচে আছি দুঃস্বপ্নের মাঝে স্বপ্ন সাজিয়ে

কাক ভেজা সকাল, দুপুর, বৃষ্টি ভেজা রাত
পুরনো স্মৃতি কাছে এসে দেয় সাড়া
বেদনা বিধুর বেদনা মধুর
কথা হয় দুজনে পাশে বসে, ভোর হয় রাত
চাদের বুকে এক টুকরো মেঘ এসে
তোর ছবি একে দিয়ে যায় হারিয়ে
চোখের জল শুকিয়ে গেছে
এখন আর কাঁদি না
চাতকের বুকে হাহাকার ওঠে
ফিরে আসবি না?
তৃষ্ণার্ত ক্ষুধার্ত মন বিবাগী হয়ে
বসে বসে কথা হয় প্রতিক্ষণ
বেচে আছি দুঃস্বপ্নের মাঝে স্বপ্ন সাজিয়ে।

অভিমানী

নীলচে তারার আলোর নীচে
শুয়ে আছি ঘাসের পরে
নক্ষত্রের প্রশ্নের উওর খুঁজি
উড়ে যাওয়া মেঘের দলে
ডাহুক ডাকছে কোন এক বিরহী
সুরে, মনে পরে যায়, মনে পরে যায়
অনেক আগের কথা, ঘরে ফেরা
চেনা মুখ ভালবেসে, কাছে ডাকে আমায়
সেই সব স্মৃতি-গুলো মিশে আছে
গভীর আবেশে এই সব হিজল
তমাল আর বটবৃক্ষের মাঝে
উষ্ণতার দারুণ মুহূর্তে কিছু ছল
কিছু রহস্য উপেক্ষা করে বুকে
টেনে নিয়ে একরাশ বেদনা
জীবন কেটে গেছে আজ বহুদূরে
কিছু কথা আর না বলা কথার দোনোমনা
নিয়ে অভিমানী হয়ে শুয়ে আছি
ঘাসের পরে, সাঁঝের বেলা সন্ধ্যা প্রদীপ
গেলে নিভি, জেগে উঠি পুরনো
প্রণয়ের হাতছানিতে, এই সব ঝরা
পাতা আর পেঁচার রাত জাগা শব্দ
কানে নিয়ে শুয়ে থাকি, অভিমানী ঘাসের পরে
বহু বছর ধরে, শুধু সাঁঝের পরে ফিরে আসি
তোমাদের এই সব ভালবেসে

খামখেয়ালি

আমার দোতলা বাড়ী আর
লাল গাড়ীটার স্বপ্নের কথা
মনে আছে তোর?
আমি গ্যাদা কে সাথে নিয়ে
গাড়ী বারান্দায় গলা-বন্ধনী তে হাসফাস করছি
আর তুই দোতলার বারান্দায়
ঘুম ঘুম চোখে তাকিয়ে আছিস
তুই স্বপ্নটা শুনে বলেছিলি
"তোমরা ছেলেদের সবার স্বপ্ন
একরকম হয় কেন?"
আচ্ছা শোন আমি স্বপ্নটা বদলে দিয়েছি
দোতলা বাড়ীর দরকার নেই
আমরা থাকব বনে জঙ্গলে
প্রকৃতি মায়ের কোলে
আর গাড়ীটা বদলে দিয়েছি
ম্যাজিক কার্পেটে, শুধু জিনি টাকেই খুঁজে
পাচ্ছি না, যে তোকে কাঁধে করে আমার
কাছে উড়িয়ে আনবে সে উপায় ও নেই
অসুবিধা নেই, যতদিন গাধাটাকে না
পাচ্ছি তুই সোনার কাঠি রূপার কাঠি
জীয়ন দিয়ে ঘুমিয়ে থাকিস
আর এই ফাকে আমি অসমাপ্ত কাজগুলো
শেষ করে ফেলি
জঙ্গলটাকে সাজাব ১০০৩২৩ কৃষ্ণচূড়া দিয়ে
চাঁদের গলায় একটা দড়ি দিয়ে
বেধে রাখব যেন অমাবস্যায় হারাতে না পারে
আর নদীটা বয়ে যাবে ঠিক জঙ্গলের মাঝ দিয়ে
একে বেকে হাজার শাখা প্রশাখা হয়ে
নদীটাকে বেশী না মাএ ২৩৭ কি.মি. সরিয়ে আনলেই হবে
কিন্তু তোর চিকেন ফ্রাই আর পিৎজজা পাচ্ছি না কোথাও
আচ্ছা থাক দু'জন না হয় ভালবাসার
মৌনতা খাব
মানুষ সবার সামনে হাসে কিন্তু কাঁদে একা বা যাকে সে অনেক ভালবাসে তার সামনে- রুদ্র অনির্বান
রন্দ্রে রন্দ্রে বিষ
অনুতে অনুতে পাপ
একটা জন্ম নষ্ট হল
কিসের নেশায়?

স্কুল শেষ বেজে গেছে ছুটির ঘন্টা

আমি অপেক্ষায় আছি
তুমি কবে আসবে
এ জায়গাটা বসবাসের
অযোগ্য করে ফেলেছি
তুমি কখন হাত ধরবে
... কানে কানে বলবে 'বাড়ী চল'
পৃথিবীতে আমার কোন ঘর নেই
তুমিই বল আমি কোথায় যাব
আমি খরচ করে ফেলেছি সবকটি পয়সা
কি দিয়ে কিনবো নতুন হাস্নাহেনা
আমি কবে যাব আমার ঘরে
স্কুল শেষ বেজে গেছে ছুটির ঘন্টা
হে খোদা তুমি আসবে না
আমাকে সবুজ গালিচার
বাগান বাড়ীতে নিয়ে যেতে
স্কুল শেষ বেজে গেছে ছুটির ঘন্টা
আমাকে হাত ধরে বাড়ী নিয়ে চল
কেউ কাঁদতে শেখায় আর কেউ হাসতে। কেউ দূরে চলে যায় বলেই মানুষ কাঁদতে শেখে। আর কেউ কাছে আসে বলেই মানুষ হাসতে শেখে। যে কাঁদতে শেখায় সে চলে যাবার সময় কান্না সাথে নিয়ে যায় না। কিন্তু যে হাসতে শেখায় সে যাবার সময় হাসিটুকু সাথে নিয়ে চলে যায়

ভীষন বরষায় ভিন্ন দুই কবি

বরফ কুচি বাতাস
বৃষ্টির চাবুক
ছুটে আসা ধূলো বালি বলে গেল
জীবন ছুটতে ভিন্ন কোন পথে
কি চায় বালক? মৃত্যু?
না কি অশৈশব চুরি হয়ে যাওয়া
জীবনকে নিংড়ে চায় অমৃতের প্রসাদ
এসব কিছুতেই যায় আসে না কিছু
হঠাৎ পাওয়া এ কালবৈশাখী ঝড়ে
সে শুধুই একজন কবি
সঙ্গীটি তার প্রিয়তমা নয়
আগামীর স্বপ্নে বিভোর এক ভিন্ন কবি
জীবনকে যে চায় বেধে ফেলতে
রঙ্গীন পর্দার ফ্রেমে
এই ভীষন বরষায় ভিন্ন দুই কবির
সঙ্গী হবার কথা ছিল কোমল কোন উষ্ণতা
কিংবা মুঠোফোনের প্রেমালাপ
কেন হল না? সে ব্যাপারে দুজন কেন উদাসী?
তাদের পাশেপাশে ছুটে চলে নবাগত ভালবাসা
আবৃত স্তনের উষ্ণতা পিঠের আশ্রয়ে
মেয়েটি হাত পেতে তুলে নেয় বৃষ্টির জল
কবি দুজন বুঝে নেয়
এ পথ উষ্ণতার
ভালবাসার বৃষ্টিতে ভেজার
পথ বদলে দ্রুত এগিয়ে যাওয়া ভিন্ন জলের সন্ধানে
ধ্যাত এই ভীষন বরষার রাতে
শূরিখানায় তালা বড্ড বেমানান
অতৃপ্ত দুটি মাতাল জ্বলন্ত সিগারেট হাতে
দাড়িয়ে দাড়িয়ে তৃষ্ণার আগুনে ভেজে

এ প্রভাত আমার নয়

সূর্যস্নানের এসেছে সময়
আড়মোড়া ভেঙ্গে জেগে ওঠে কচি সবুজের প্রান
ঘুমের কোলে ঢলে পড়ে রাতজাগা নিশাচর ঝি ঝি পোকা
কোথাও প্রভাত কোথাও অনন্ত রাত

... রাত ভোর হয় কোথাও গভীর কামনায় ভালবাসা
ভালবাসাও ঘুমায় রাতভর ক্লান্তির শেষে
একটা গালের টোলে হাসে প্রথম প্রভাত
দুটি সুখ খুব কাছাকাছি

চোখের ক্লান্তি নিয়ে আঁকা স্বপ্ন
কত কিছু দেখে আধার ভালবেসে
এ প্রভাত আমার নয়; নয় এ সূর্যস্নান
অভিশপ্ত আধার নিয়ে আকিবুকি

কার্ণিশে কিচিরমিচির চড়ুইয়ের প্রান
অহবান করে নতুন সূর্য কিরণ
ঘাস আর শিশিরের আপাতত দিনভর আড়ি
কথা হবে পরবর্তি সূর্যাস্তে

মাইল হাজার মাইল দূরত্ব
আকাশে ঘেমের ঘনঘটা
বাতাস এসে বলে গেল কারো বুকের শূন্যতা
বৃষ্টি হোক ছুয়ে দেখি কতটা

দূরে দূরে সওদা হয় কাছাকাছি আসার
আকাশের বুকে ভাসে আমার একখন্ড মেঘ
আমার বুকে একটুকরো আকাশ
দুজনের মিলেমিশে শূন্যতা

এ প্রভাত আমার নয়
আমারতো অনন্ত শূন্যতা
এ প্রভাত আমার নয়; নয় এ সূর্যস্নান
অভিশপ্ত আধার নিয়ে আকিবুকি

আমি আর আকাশ

এখনও মেটেনি তৃষ্ণা
দু'চার পেগ আরও হয়ে যাক
মাতাল না হলে জলের অপমান
তুমি যাচ্ছ চলে?
যাও বোতলটা দিয়ে যাও
আচ্ছা পেয়াজ কুচি লাগবে না
শুধু শুধু জলের সাথে রাগ!!!
আকাশ দেখেছ আছ?
ওহো সাত সকালেই তার
সে কি কান্না
... আমার জল নেই
তার গ্লাসের পর গ্লাস
দ্রবীভূত হোক আরও কিছু মেঘ
তারপর দুজনে মিলে কাঁদবো
আমি আর আকাশ...

শান্তি ঘুম ভালবাসা নয়

কোথাও বাজে একলা বাঁশী
দোতারাটা একলাই কাঁদে
এমন সময় আমার ইচ্ছে করে
সব ছেড়ে যেদিকে দু'চোখ যায়
চলে যাই দূরে; দূরে বহুদূরে
রাত শেষে ফোটে প্রভাত
ইচ্ছে করে অনন্তকাল
আটকে রাখি এই আধার
আর টুপ করে ডুবে যাই
অতল কোন দীঘির জলে
যেখানে শুধুই মৌনতা
গভীর থেকে আরও গভীরে
যেখানে খুব গোপনে বাস করে
আমার ভেতরের আমি
দুজনে হাতে হাত রেখে
ধ্যানমগ্ন হয়ে বসে থাকি
শত শত শতাব্দী
শান্তি ঘুম ভালবাসা নয়
আরও গভীর কিছু
আমি আর আমি দুজন শুধু
শীতল চারপাশ
সদ্যস্নাত শরীরের সুবাস
কচি সবুজ ঘাস হয়ত
হয়ত মাটির ঘর
কিছুই নয় হয়ত শুধুই শূন্যতা
আমি আর আমাকে ঘিরে
মহাকাশ মহাকাল
অনন্তের পথ চলা নয়
পাথরের স্হিরতা
সূর্য নক্ষএ চাঁদ ডুবে যাক; জেগে উঠুক
এসবই নির্থক এমন এক গভীরতা
আমি ডুবে যাই
জনম জনমের তরে
প্রতিদিনের মৃত্যু থেমে যাক
একবার শূন্য হতে চাই
শেষবার বাজী হোক সবটুকু নিয়ে
আমি দাড়িয়ে আছি ধূলোর মাঝে
তুমি যাবে আমার সাথে?

তুমি যত দূরে যাও

তুমি যত দূরে যাও
 পৃথিবীর উপরে নীল আকাশ
 কৃষ্ণ কাল মেঘ
 বুকে তার ঘন বরষা
 বাতাসের ফিসফিসানি
 অসীম সাগর আধার
 মাস্তুলে বাধা অমাবস্যা
 উড়ে যাওয়া শঙ্খচিল
 ছেরা ছেরা দ্বীপ
 ঝাউবন কাশফুল
 বনহংসের বুকে শূন্যতা
 রাখালের বাঁশীতে বিষ
 তুমি যত দূরে যাও
 পায়ের নীচে দূর্বা ঘাস
 ধূলো ধূলো পথ
 পথে পথে নাগলিংগম
 শ্যাওলা দীঘি কলমীলতা
 নির্জন দুপুর গ্রাম
 শূন্যতার কাছাকাছি বসবাস
 তুমি যতদূরে যাও........
শীতার্ত এই আধারে আমি
আত্মহত্যা করি রোজ রাতে
আর প্রতিটি সকাল আসে
আত্মহত্যার আধারে ডুবে যাব বলে

অপূর্ণ আমি

কুয়াশার ঘুম ভেঙ্গে জেগে
ওঠে এক ফালি চাঁদ
কথা ছিল বয়ে চলা জীবনের
নদী বেয়ে হাতে ধরে হাত
শিশিরের বুক চিরে হেসে
ওঠে নক্ষত্র আর তারা
ডাহুকের ডাক শুনে
এক খন্ড মেঘ কেঁদে হয় সারা
রাত ভোর হলে পরে
ঘুম ভাঙ্গে একলা শালিকের
সারা বেলা খুঁজে মরে আপন ছায়া সঙ্গীরে
সূর্যের ঘুম এলে মুখ লুকায়
সমুদ্র উত্তাল করে আশ্রয়
ঝরা পাতা ঝরে যায়
নিঃশব্দে সূর্য বিদায়ের কান্না লুকায়
পাহাড়ের বুকে ঢেউ এলে পর
তৃষ্ণার্ত হয়ে ছুটে চলে
ঝর্না হয়ে ঝরে যায়, ভুলে আপন ঘর
জীবনের রং গুলো মুছে দিয়ে
মিশে যায় সবকিছু হাওয়ায়
পূর্ণতা খুঁজে ফিরি, অপূর্ণ আমি
তোমার চোখের মায়ায়।

ইচ্ছে করলেই

ইচ্ছে করলেই হতে পারে সাজান বাগান
ইচ্ছে করলেই শেষ হতে পারে এই চাতকের গান
ইচ্ছে করলেই হতে পারে অরণ্যে অরান্যক
ইচ্ছে করলেই হতে পারি নতুন রঙ্গে ধন্য
ইচ্ছে করলেই পুড়িয়ে সব স্মৃতি
গড়তে পারি ভালবাসার সমাধি
ইচ্ছে করলেই বাধতে পারি মনটাকে শক্ত হাতে
ইচ্ছে করলেই যেতে পারি মেঘের ওপারে
তবু বলি কেন যাব, হারিয়েছ তুমি
ভালবাসা হারায়নি, এভাবেই কেটে যাবে
বদলে নেব না নিজেকে সময়ের স্রোতে
যাও চলে যাও, খুঁজে নাও নতুন গদ্য
এই আমার ভাল, কান্না ভেজা পদ্য

সাদা শাড়ী, নীল পাঞ্জাবী

তুই কি পৌঁছে গেছিস
সাদা জমিন আর কালো
পারের শাড়ী আর নাকে
বিন্দু বিন্দু ঘাম নিয়ে
কাচের চুড়ি আর কপালে কালো টিপ দিয়ে
আমার নীল পাঞ্জাবীটা কোথাও খুঁজে পাচ্ছি না
তন্ন তন্ন করে খুঁজেছি
প্রতিটি ড্রয়ার, খাটের নীচে
তোষক বালিশ উল্টে পাল্টে
পুরো ঘর তছনছ, কোথাও নেই
আচ্ছা শোন মন খারাপ করিস না
গুটি পোকার চাষ শুরু হয়ে গেছে
আর কিছু দিন পর ওদের বুকে
জন্ম নেবে মিহি সিল্ক
তাতির সাথে আগেই কথা হয়ে গেছে
রেশমি সুতা ঘরে তুললেই ওরা কাজ
শুরু করে দেবে
কথা দিয়েছে আমার নীল পাঞ্জাবীটা
ফিরিয়ে দেবে এবার
তুই একটু অপেক্ষা করতে পারবি না সোনা?

অরণ্য

দিনক্ষণ আজ আর মনে নেই
ধানমন্ডি ২৭, রিক্সায় পাশাপাশি
তুই আর আমি
গোলা আইসক্রিম এর ভ্যান চোখে পরতেই
তুই যেন সাত বছরের খুকি হয়ে গেলি
দশ বিশ জনের লাইন ঠেলে
হাজার টাকার নোট ভেঙ্গে
তোর হাতে তুলে দিলাম
মাল্টি-কালার এর একটা গোলা
সেই ষাট টাকার গোলা পাওয়ার
উচ্ছ্বাস, একটা নক্ষএ তোর হাতে
তুলে দিলে দেখতে পেতাম কিনা জানি না
তোর ঠোটের উষ্ণতায় গোলা বিগলিত হয়ে
গলে গলে পানি হতে লাগল
তাই দেখে তোর মনও হয়ত আদ্র
হয়ে উঠল আমার প্রতি
অরণ্যকে খুঁজে এনে দেবার প্রতিজ্ঞা করে
বসলি কি জানি কি মনে করে
সময়ের সাথে সাথে গোলা শেষ হল
তোর ঠাণ্ডা হিম শীতল ঠোটের মত
হয়ত হৄদয় টাও শীতল হয়ে গেল
আমার অরণ্যকে আর খুঁজে দিলি না
আজ আর তুই নেই
আর আমি? আজও
নিঃস্তরঙ্গ তরঙ্গের মাঝে খুঁজে ফিরি আমার অরণ্যকে

এ এমনই

জানিনি আমি কিছুই
শুনিনি কোন কথা
যাচাই করিনি কষ্টি পাথরে
বর্ষায় ভিজে আমি ছিলাম সুখে
রৌদ্র খরতাপে পুড়ে পুড়ে
... নিজেকে বুঝিয়েছি এ এমনই
দূর হতে দূরে যেতে যেতে আমি
শুনেছি কি সে গান
মিথ্যা প্রলাপ বকে
নিজেকে বুঝিয়েছি এ এমনই
সবটুকু নিঃশেষ হলে
হাহাকার বুকে পিষে
সামাজিকতার হাসি হেসেছি কতবার
আর যে জিতে গেল
প্রতিটি মিথ্যা চালে
প্রশ্ন জাগে
সে আসলে কি পেল?
হারজিতেরই বুঝি খেলা ছিল
তবে কে হারল কে জিতল?
আমি হাসি; মাতাল হই
দেশী কিংবা বিদেশী লেবেলে
আর মনে মনে বলি এ এমনই
মাতাল হওয়া যদি হেরে যাওয়া হয়
সুস্থ মস্তিষ্কে তুমি কতটুকু জিতলে?
আসলে কিছুতেই কিছু নয়
আমরাই ছিলাম গুটি
ভালবাসা খেলে গেছে দারূন ধূর্ততায়
এ এমনই

রোদ্রিতা কেমন আছ?

 রোদ্রিতা কেমন আছ?
আমি হয়ে আছি বড় এলোমেলো
কয়েক পেগ ভোদকা আর এটলাস বিয়ারের
মাথা ব্যথা নিয়ে তোমাকে লিখতে বসেছি
আজ প্রভাতের সূর্য দেখেছ?
পাখিগুলো ছুয়ে ছিল ডানা
গভীর ঘুমে আমি হয়ত স্বপ্ন দেখেছি
... যখন ঘুম থেকে উঠলাম তখন পড়ন্ত বিকেল
সূর্যটা হাই তুলছে ঘুমোবে বলে
আমি জেগে উঠতেই বুকের মধ্যে নড়েচড়ে
কষ্টগুলো জানান দিয়ে গেল তারা দিব্যি জেগে আছে
রাতের আধারে পরীগুলো চলে গেল ভুল ঠিকানায়
আমি নিজের সাথে আড্ডা দিতে
বন্ধুদের ফাকি দিয়ে
মোবাইল সাইলেন্ট করে
এই ব্যস্ত শহরের জ্যাম ঠেলে
পৌছে গেলাম সুরিখানায়
ফিরতি পথে ভয় হচ্ছিল
চার চাকার কোন দানব
আমাকে মেরে না ফেলে আবার
ঘরে ফিরেছি কিংবা কোন জেলখানা
কি জানি আজকাল পুরো পৃথিবীকেই
একটা মস্তবড় জেলখানা মনে হয়
তুমি আমি আমরা সকলেই তা কয়েদী
হয়ত আমাদের কৃতকর্ম অনুযায়ী
এক একজনের কঠিন থেকে কঠিনতর জীবন যাপন
কিন্তু আমি অনেক খুজেও আমার
অপরাধনামার কেস সটাডি পাচ্ছি না
কি অপরাধে হাজতবাস সেটা জানলে
অন্তত একটু সান্তনা থাকতো
রোদ্রিতা কেমন আছ?
আমি হয়ে আছি বড় এলোমেলো
আচ্ছা শোন কখনো সময় হলে
আমার কবিতার বইগুলো
একটু গুছিয়ে দিয়ে যেও
কি দেবে না?

অপেক্ষা

সময়ের সব চেয়ে বড় সমস্যা সে প্রতি নিয়ত বদলায়.....প্রতিটি মানুষের নিজস্ব একটা সময় ঘড়ি থাকলে ভাল হত....আমার এখন ভাল লাগছে... নো প্রব্লেম ঘড়ি বন্ধ করে দাও...যতক্ষন ইচ্ছে ভাল লাগাকে উপভোগ করে আবার ঘড়ি চালু করে দিলাম...মন খারাপ? ঘড়ির কাটা ঘুড়িয়ে মন খারাপের সময়টুকু পার হয়ে গেলাম....এতে অবশ্য একটা সমস্যা আছে...কোন কারনে যদি ঘড়ি নষ্ট হয়ে যায় তবে যে যেখানে আছে সেখানেই আটকে থাকবে...ধরুন যে বাথরুমে গোসল করছে সে সারা জীবন গোসলই করবে....যে খাচ্ছে বছরে পর বছর সে খেয়েই যাচ্ছে....সব চাইতে কষ্ট হবে যে অপেক্ষায় আছে....তার অপেক্ষা কোন দিন শেষ হবে না...অবশ্য জন্মের পর থেকেই আমরা অপেক্ষায় থাকি...কিসের অপেক্ষা জানেন?...মৃত্যুর অপেক্ষা...আর এই অপেক্ষা দূর্বিসহ তাই ছেলে ভুলানোর মত আমরা পড়াশুনা করি, চাকরি করি, সংসার করি, রাজনীতি, ঝগড়া বন্ধুত্ব ভালবাসা আসলে সবকিছুর মূলে একটাই নিজেকে যে ভাবে পারা যায় ভুলিয়ে রাখা....আমি অপেক্ষায় আছি..

আলো নিভিয়ে দাও

আলো নিভিয়ে দাও
বড্ড বেশী উজ্জ্বলতা এখানে
বড় বেশী কোলাহল হৈ চৈ
দেয়াল জুড়ে দু'তিন পল্লা ম্যাক-আপের আস্তরণ
বাতাসে কড়া পারফিউমের ঝাঁঝ
চারপাশ জুড়ে কিছু অসুখ লুকীয়ে রাখা সুখী মুখ
অথচ সবাই জানি দূরত্ব যোজন যোজন
এস মুছে দেই আমাদের অতীত গল্প
ভুলে যাই সামনের অনিশ্চয়তা
আজ থাকে শুরু হোক নতুন পথ চলা
আরও কিছুটা কাছাকাছি এসো
যতটা কাছে এলে
নিজের হৃৎস্পন্দন কে বিশ্বাসঘাতক মনে হয়
তোমার নিঃশ্বাস কে নিজের বলে ভ্রম হয়
নিরাশ্রয় আঙুলগুলো হয়ে ওঠা বাকঁচতুর
নিজের অস্তিত্বকে গ্রাশকরে নেয় উষ্ণতা
চারদিকে শোনা যায় কবুতর এর বাকবাকুম
আলো নিভিয়ে দাও
এসো মুছে দেই আমাদের অতীত
ভুলে যাই আমাদের নিয়ন্ত্রিত ভবিষ্যৎ
এই মুহূর্ত থেকে জীবন হোক ভীষণভাবে খুব কাছাকাছি

আজকাল জীবন যাপন

ক্লান্ত দুপুর শ্রান্ত পথিক
তপ্ত পিচ ঢালা পথে
নতুন করে পথ চলা
দূরে বহু দূরে নীলিমা
যেখানে নেমে এসে
চুমে দেয় ধান-শালিকের পালক
সেখানেই মিলনের শেষ আকাঙ্ক্ষা
পেছনের পথে একে বেকে শুয়ে আছে
হঠাৎ মরে যাওয়া নদীর শুকিয়ে যাওয়া বুক
এমন করে শুকিয়ে যেতে হয় বুঝি?
এমন হঠাৎ মৃত্যু মেনে নেয়া যায় বুঝি?
এ যেন আমাজনে গ্রীষ্মের দাবানল
ভেতরটা এমন করেই পোড়ে বুঝি আজকাল?
এমন শূন্যতার হাহাকার কেন সাহারার বুকে?
মিলন হবে, ঠিক মিলে যাবে একদিন
ঐ দূরের নীলিমায় অবাধ্য ডানা মেলে
একদিন ঠিক উড়ে যাবে রাতজাগা এক জোড়া বিহঙ্গ।
ততদিন না হয় জ্বলে পুড়ে খাক হয়ে যাক এই নদী
এই পথ, ক্লান্ত দুপুর, পথিক, পথিকের দুঃখ
আর বেদনার অতীত।

শিকারি

বৃদ্ধ অশ্বত্থের বুক থেকে শূন্যে
ডানা মেলে দেয় শঙ্খচিল
কিছুটা আবোল তাবল উড়ে উড়ে
পৌঁছে যায় সূর্যের আরও কিছুটা কাছাকাছি
স্থির ডানায় ভর করে বুঝে নেয়
বাতাসের গতিবিধি
সোনালী রোদ্দুর তার মসৃণ পালকে
যেন পিছলে সরে যায় সমীহে
ঈশ্বরের আশীর্বাদ পুষ্ট হয়ে পৌঁছে যায়
একটা নির্দিষ্ট উচ্চতায়
নির্দিষ্ট কক্ষপথে নিঃস্পন্দন
উড়ে চলে অবিরাম
পৃথিবী হাজার ব্যস্ততায় ভুলে যায়
তার জলজ্যান্ত অস্তিত্ব
একবার মাথা তুলে দেখে নেয়
ছোট ছোট মেঘদের দল
তাদেরই কেউ দূত হয়ে দিয়ে
যায় সীমান্তের খবর
ভূপৃষ্ঠের বুকে তার ছায়া ঘুরে ঘুরে
ষড়যন্ত্রের বৃও রচনা করে চলে
আপাত দৃষ্টিতে শুধুই উড়ে যাওয়া বলে
ভ্রম হলে ক্ষতি নেই কোন
শুধু অপেক্ষা, শুধুই নির্মম অপেক্ষা!!!!
তারপর সঠিক সময় আর সুযোগের আগমনে
চোখের পলক ফেলবার আগেই
শিকারি তুলে নেয় তার কাঙ্ক্ষিত শিকার।।

ভালবাসা ফিরে গেছে চিরবসন্তের দেশে

এখানে বড্ড শীতের প্রকোপ
উষ্ণতা নেই কোথাও
ঠাণ্ডা হাত শীতল চাহনি
হৃদয়গুলো ঢেউহীন অস্থির
দেবদারুর বুক থেকে ঝরে পরা
শুকনো পাতার বুকে শুধুই
কষ্টের ক্ষত
বিশ্বাসঘাতক সূর্যের হাসি
কুয়াশার বুক চিরে
পথ দেখাবে না কখনো
নিশুতি পেঁচার বোবা কান্নার ধ্বনি
প্রতিধ্বনি হয়ে ফিরে এসে
বারবার স্মরণ করিয়ে দেয়
এখানে জীবন মানে মৃত্যুর অপেক্ষা
এখানে সুন্দর নেই, সুন্দর
পথ ভুলে হারিয়ে গেছে গত
শতাব্দীগুলোতে, ফিরে আসেনি কখনো
বসন্ত আসার আগেই চৈত্রের খরতাপে
পুড়ে যাবে পৃথিবীর স্তন
তাই এখানে ভালবাসা নেই
ভালবাসা ফিরে গেছে চিরবসন্তের দেশে

আজন্ম অসভ্য

অনন্তের পথে হেটে হেটে
যুবকেরা ক্লান্ত হলে পর
এসে বসে স্রোতস্বিনী নদীটির পাশে
আজলা ভরে চোখে মুখে জল ছিটায়
ঠান্ডা শীতল জলে খোজে দুদন্ডের অবসর
আরবের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের শেষে
যুবকেরা শীতার্ত মরুভূমীর রাতে
উষ্ণতার খোজে ভীড় জমায় পান্থশালায়
দু'চার গ্লাস উল্টে দিয়ে ভুলে যেতে
চায় শত্রুর ভীতু চোখে মৃত্যুর ছাপ
যুবতীর কোমল আঙ্গুল বেয়ে হারিয়ে যায়
কালসিটে হয়ে যাওয়া রক্তের দাগ
সারাদিনের ক্লান্তি মুছে দিয়ে এই সব যুবকেরা
জ্যাোস্নার আধারে ফসলী করে তোলে বিরান মাঠ
শত শত কালো মানুষের রক্তের
নদী বেয়ে তুলে আনা হীরক খন্ডে
যুবকের নেই কোন অভিলাষ
এই সব যুবকেরা! এই সব যুবকেরা!
বৃক্ষমাতার অশ্রু মুছে দিয়ে
পৃথিবীর থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে হিংস্র কুঠার
এরাই কামান আর বারুদের পোড়া
কটু গন্ধ বাতাসে ছড়িয়ে দিয়ে
করে গেছে হিংস্র উল্লাস
তারপর হয়ে গেছে ধূসর ইতিহাস

হৃদয়ের গভীরতা বাড়ে না

অসীম নীলের ঢেউ গুনে গুনে
একদিন ঢেউ হয়ে গেছি
উড়ে যাওয়া এ্যালবাট্রসের ডানার
ব্যাপ্তির সাথে তাল মিলিয়ে
ডানা মেলে দিয়েছি
বঙ্গোপসাগর থেকে ভূমধ্যসাগর হয়ে
অতলান্তিক কিংবা প্রশান্তির দিকে
অবশেষে জেনেছি
জোয়ার ভাটার অমোঘ টানে
হৃদয়ের গভীরতা বাড়ে না
শুধুই পলি জমে

পারাপার

অতৃপ্ত আত্মার মত ডানা ঝাপটে
উড়ে এসে বৃক্ষ কুঠিরে আশ্রয় নেয়
একটা কালো বাদুড়
মহুয়ার মাতাল গন্ধে
পৃথিবীর প্রেমে পরে যায় চাঁদ
নেমে আসে জমিনের বুকের আরেকটু কাছাকাছি
বুড়িগঙ্গার জল ভুল বুঝে
ভালবেসে ফেলে চাঁদকে
উচ্ছ্বাসে ফুলে ফুলে ওঠে তার দু'কূল
জানালার উড়ে যাওয়া আচলের ফাঁক গলে
ঢুকে যায় চাঁদের আলো
অর্ধাবৃত দম্পতি ভালবাসা ঘেঁটে
গভীর আবেশে ঘুমায়
অনাগত সন্তানকে বুকে চেপে
পাশের ঘরে প্রতিধ্বনি তোলে বৃদ্ধ পিতার দীর্ঘশ্বাস
অনিয়ন্ত্রিত বর্তমান তিনি সপে দিয়েছেন
নিয়ন্ত্রিত ভবিষ্যেৎর হাতে
তার জানালায়ও উকি দেয় চাঁদ
বৃদ্ধ ফিরে যান তিরিশ বছরের
পুরনো এক রাতে
তখন ভালবাসা ছিল পূর্ণ যুবতী
সারারাত ছবি এঁকেছেন প্রথম সন্তানের
বছর ঘুরতেই খোকা তার আগমন বার্তা
জানায় প্রথম ক্রন্দনে
ঝাপসা হয়ে আসে বৃদ্ধের দৃষ্টি
চশমার আরশিতে ধুলো জমেছে বুঝি
হঠাৎ তার সামনে উদয় হয়
আলো ঝলমলে এক তেইশ বছরের অপ্সরী
-'বার বছর ধরে তোমার অপেক্ষায় আছি'
ভীত চোখে বৃদ্ধ বুঝে নেয় এ তারই আরতি
-'চলে এস হাত ধর আমার'
মোহগ্রস্তের মত হাত বাড়িয়ে দেন তিনি
হঠাৎ ডানা ঝাপটায় একটা কালো বাদুড়
মহুয়ার মাদকতা ভুলে উড়ে যায়
দূরে বহুদূরে, অসীমের খুব কাছাকাছি

হুট করে চলে এস কোন এক দিন

হুট করে চলে এস কোন এক দিন।
তোমার অভিমানগুলোকে ফাঁকি দিয়ে,
রংধনুর আসমানি রং সাথে নিয়ে
শুভ্র মেঘের ভেলায় ভেসে,
শারদে আগমনী সুর তুলে।
চলে এস কোন এক দিন।
আমরা একটা বোহেমিয়ান জীবনের
আত্মসমর্পণ দেখবো সন্ধ্যার আলোতে।
সুখ তারার জেগে ওঠা
জোনাকির ম্লান আলোতে?
ঘাসফড়িঙ এর ঘরে ফেরা
দুব্বার ঠোটে চুমু এঁকে!
কথা দিচ্ছি অবাধ্য ঘুড়ির
নাটাই গুজে দেব তোমার হাতে।
হুট করে চলে এস কোন এক দিন!
দেখতে চাই আজও কি করে,
তোমার পায়ের শব্দে
ছলকে ওঠে রক্ত বুকের মধ্যে।

স্বরচিত কারাগার

মানুষের ভেতরে বাস করে
বেদে সাপুড়ে
বোহেমিয়ান জীবন বেছে নেয়া
অদ্ভুত ছেলে
কখনও চিরকুমার গ্রাম্য গায়েন
টগবগিয়ে ছুটে চলা আরবের বেদুইন
সুমেরু কুমেরু বিস্তৃত এ বিশাল কারাগারে
তবু মানুষ গড়ে তোলে জেলখানা
নিজেকেই বন্দী করে
শূন্য থেকে শূন্যতা চুরির দায়
কি করে বয়ে বেড়াবে....
কেউ বাঁচে স্বপ্নে কেউ শূন্যতায়
আর যার শূন্যতা টুকুও হারিয়ে যায়?
বিদায় বলে সামনে এগিয়ে যেতে যেতে
মুখ ফিরিয়ে দেখি
আমার ছায়াটি তার কাছেই বসে আছে...

শিশিরে যেন ভেজেনা চোখ

শব্দ খুন হোক
প্রতিটি শব্দহীন ক্ষনে
শিশিরে যেন ভেজেনা চোখ
মুক্তা ফোটেনা যেন সবুজের বুকে
নিঃশ্চুপ চুপচাপ
ধ্বনী প্রতিধ্বনী-হীন অথৈ সাগরে
নাবিক খোজে ঢেউ
গাংচিল উড়ে
ছেড়া মাস্তুল জুড়ে
শব্দ খুন হোক
প্রতিটি শব্দহীন ক্ষনে
ছায়া উড়ে উড়ে ছুয়ে যায়
ছুয়ে ছুয়ে দূরে যায়
শিশিরে যেন ভেজেনা চোখ
মুক্তা ফোটেনা যেন সবুজের বুকে
....এতদিন নিজের কষ্টগুলো বয়ে বেরিয়েছি....এখন রোজ রোজ সে তালিকায় যুক্ত হয় নতুন নতুন শব্দ....যদিও সবগুলোর একই নাম....তুমি... কষ্টে আছ তাই ভারী হয় আমার কষ্টের রোস্টার
বেঁচে থাকার জন্য হাজার হাজার বন্ধু, আত্মিয়, সম্পর্কের প্রয়োজন হয় না....একজন মানুষের অকৃত্রিম একটু উষ্ণতা, একটু ভালবাসা, ব্যস্ততার মাঝে ও দু দন্ড পাশাপাশি এসে হাতে হাত রেখে কথা বলা কখন যে বুকের মধ্যে বেঁচে থাকার নতুন চারা গাছ বপন করে দেয় তা বোধহয় মানুষ নিজেও জানে না। অবাক লাগে আমিও আজকাল স্বপ্ন দেখি....বেঁচে থাকতে চাই...কষ্টেরা আছে সেতো থাকবেই....আর মাঝেমাঝে হঠাৎ এসে ধরা দেয় এমন কিছু সম্পর্ক যারা বাঁচতে শেখায় হাসতে শেখায়...তখন নিজেকে বড় সৌভাগ্যবান মনে হয়....

শত শত হাহাকার ফিনিক্স

হেটে হেটে যেতে যেতে
পথে পথে কিংবা বিপথে মিলে যায় হঠাৎ জীবন
ক্ষণিকের জন্য মৃত্যুর অবসান
অস্থি মজ্জা মাংস নয় কোন এক অপরিচিত মানবী
মানবী নয় কোন মৎসকুমারী
বসন্তবৌরি হয়ত, কি জানি আমি জানি না
কোন জান্নাতুল ফেরদাউসের আসমান পাখি
অস্থি মজ্জা মাংস নয় -হৃদয়ের মালিকানা নিয়ে
মুসাফিরের চোখ জল অন্ধকার অতীত
সূক্ষ্ম কোন বোধ জন্ম নেয়। জন্ম নেয়? নেয়? নেয় না?
... কি জানি আমি জানি না
কষ্ট আর্টারী শিরা উপশিরা ধমনীতে যে অবরোধ
-অবরোধে ওড়ে শান্তির পায়রা
একটা একটা দুঃখ পাপ অপ্রাপ্তি
-অবহেলা ঘৃণা অন্ধকার
উড়ে যায় ঘাসফড়িঙ নীল প্রজাপতি
-মুনিয়া সবুজাভ টিয়া
পান্থশালায় ফুরায় গল্প, শেষ হয় সব উল্টানো পান পাত্র
সামনে ধু ধু মরুভূমি
স্পষ্ট থেকে স্পষ্টতর হয় সাইমুম ঝড়
চারিদিকে যুদ্ধের দামামা, শুধুই ধ্বংসের খেলা
একটু জিরিয়ে নেই? দু'দণ্ড চোখ বুঝে থাক ক্লান্তি?
মুসাফিরখানায় নিভে যায় শেষ বাতি
নেকাবে মুখ ঢাকে ঘোড়সওয়ার বেদুইন
আকাশে জন্ম নেয় শত শত হাহাকার ফিনিক্স

কবি

রোজ রোজ বেদনা আষ্টেপৃষ্টে
জড়িয়ে ধরে আমায়
আমাকে নাকি ভীষন পোড়াবে
অথৈ কষ্টের নীলে
আমি ভয় পাই না
শংকিত হই না মোটেই
ওরা জানে না কবি হয়ে উঠতে
কতটা কষ্ট বুক পেতে
স্বাগত জানাতে হয়
জানেনা কতটা দহনে
একটা কবির জন্ম হয়
যে শব্দের শরীর পরম যত্নে
তুলে দেই ধর্ষনের জন্য
তোমরা কি জান
তার পিতার বুকে কতটা হাহাকার
কতটা পুড়েছি বলে
আজ আমি শব্দের দালাল?
বেহুলার ঘরে যে কালকেউটে ঢোকে
তার নাম কি জান?
সে অবিশ্বাসে শেষ হয়
একটি গল্প
এভাবেই লেখা ছিল
তার সমাপ্তি
রেললাইন বড় অদ্ভুত জিনিস
সারাজীবন এক সাথেই চলে
কিন্তু নিজেদের মধ্যকার
ওই অল্পটুকু দূরত্ব কখনো অতিক্রম করে না
ভালবাসা জিনিসটা যতক্ষন পাশেপাশে হাটে চারদিকে একটা অপার্থিব শান্তি বিরাজ করে। আর যখন উল্ট পথে হাটে তখন দুটি জিনিস হয়। আপনার ভুলে যদি সে উল্ট পথ ধরে তো আপনি সারা জীবন আপসোস করবেন। আর যদি তার ভুলে হয় তো সারাজীবন জ্বলবেন। এখন এই সারাজীবনের ভেজাল থেকে মুক্তির পথ হচ্ছে আপনাকে অবশ্যই আবার ভালবাসতে হবে। তবে টাইম পাইস হলে চলবে না। তাহলে আফসোস এবং জ্বালা পোড়া ও টাইম মত ফিরে আসবে। আপনাকে বরং আরো বেশী সিরিয়াস হতে হবে। যেন এটা আপনার ভুল শুধরানোর সুযোগ। আর যদি জ্বালা পোড়ার ব্যাপার হয় তো অপটিমিস্টিক হয়ে ভাবতে হবে জগতে ভাল কিছুও আছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে এই ভালবাসাও যদি ব্যর্থ হয়? ধুর এত আগাম চিন্তা করেন কেন। কিন্তু কিন্তু করলে জীবনেও কিন্তু শেষ হয় না....
দুঃখে সবাই কাঁদবে সেটাই স্বাভাবিক....কিন্তু কিছু কিছু সুখ.... কিছু কথা.. কিছু একান্ত আপন মুহূর্ত চোখে জল এনে দেয়...আপনার এমন কখনো হয়েছে?....আমার এখন হচ্ছে.....স্বপ্নেরা বেচেঁ থাক যুগযুগান্তর শতাব্দীর পর শতাব্দী....এমন কি যখন আমি থাকব না তখন ও বেচেঁ থাক স্বপ্ন....এমন হঠাৎ পাওয়া আনন্দ অশ্রু.....ভালবাসি......
একটা দীর্ঘ দীর্ঘ সময় অবহেলায় কাটানোর পর ধীরে ধীরে আমার মধ্যে হীনমন্যতা বাসা বাধতে শুরু করল। কনফিডেন্স নামক যে বস্তুটি আছে সেটা মাইনাসের দিকে চলছে শুরু করল। আমি বুঝতে পারছি কোনটা ন্যায় কোনটা অন্যায়। কিন্তু আমার নিজস্ব মতামত ততদিনে গলা টিপে হত্যা করা হয়ে গেছে। মাঝেমাঝে ভাবতাম আমি হয়ত মানুষ নই। আমার চারপাশে একটা শামুকের খোল তৈরী হল। আর আমি হলাম শামুক মানব। সমাজ সংসার থেকে নিজেকে লুকিয়ে আমার বসবাস শুরু হল সেই খোলের মধ্যে। যেকোন ব্যাপারেই আমি আমার মতামত প্রকাশ করছি, ভালবাসছি, দুঃখ করছি, একাকীত্বের যন্ত্রনা সহ্য করছি, সবই করছি। কিন্তু সে শব্দ কারো কাছে পৌছায় না। কারন এর সবই হচ্ছে শামুকের খোলের মধ্যে। একটা দীর্ঘ মানুষিক আর শারীরিক যুদ্ধের পর আমার খোলসটা ভাঙ্গতে শুরু করেছে। এখনও কাজ চলছে পুরোপুরি সফল হতে পারিনি। অবহেলা বড় ভয়ংকর জিনিস। আপনি যখন এর শিকার হবেন তখন আপনার ব্যক্তিত্ব বিকাশ ভয়াবহভাবে বাধাগ্রস্ত হবে। তাই কারও অবহেলা অতি সাবধানে এরিয়ে যাওয়াই শ্রেয়। তাকে আঘাত করার প্রয়োজন নাই, জোর করে নিজেকে জাহির করার ও দরকার নাই। কিন্তু আপনি আপনার কৃতকর্মের জন্যই যে অবহেলার শিকার সে চিন্তা কখনোই মাথায় আনবেন না। আর আপনি যখন অবহেলা করার মত অবস্হানে থাকবেন, তখন কাউকে অবহেলা করার আগে নিজেকে একবার তার অবস্হানে দাড় করিয়ে দেখবেন। বিশেষ করে বাবা মা কখনোই আপনার সন্তানের চিন্তা চেতনাকে অবহেলা করবেন না। এতে তার যুদ্ধ করে বেচেঁ থাকার শক্তি হ্রাস পায়। সে অল্পতেই ভেঙ্গে পরে। বেশী আবেগী হয়ে ওঠে। সবসময় তার মনে হয় তাকে কেউ ভালবাসে না। মানুষ তার এই দূর্বলতার সুযোগ নেয় এবং সে বারবার প্রতারিত হয়। এমন নয় যে, সে বুঝতে পারে না যে তাকে প্রতারিত করা হচ্ছে। কিন্তু গুরুত্ব, স্নেহ পাওয়াটাই তার কাছে মুখ্য হয়ে ওঠে। এবং পরে আরও বেশী কষ্ট পায়। এটা রূদ্রর নিজের জীবনের থেকে নেয়া শিক্ষা। উফফ মনে হচ্ছে সাইকোলজি ক্লাসে লেকচার দিচ্ছি।

"আমি ভাল আছি"

আচ্ছা বলতো হয়েছে কি?
কলম খুঁজে পাচ্ছ না?
হাতের লেখা বিচ্ছিরি হয়ে গেছে বুঝি?
নাকি নীল খাম খুঁজছও?
সাদা হলে কি এমন ক্ষতি?
রাত জাগছ বলে মা খুব বকছেন আজকাল?
তাই বুঝি মন খারাপ?
দিনভর ঘুমিয়ে কাটিয়ে দিচ্ছ দিন?
ঘরকন্না ফেঁদে বস-নিতো?
জামাই বুঝি ভীষণ বদরাগী?
বাচ্চাগুলো কি দুষ্টের শিরোমণি?
এসব কিছুই নয়?
তবে দু'লাইন লিখতে কেন এত কিপ্টেমী?
আজকাল চিঠি লেখার চল নাই?
মোবাইল, এসএমএস, ইনস্ট্যান্ট ম্যাসেজ?
কিন্তু আমার যে একটা চিঠি চাই
-"আমি ভাল আছি"
কষ্ট করে এতটুকু লিখে দিও লক্ষ্মীটি....

কি চাই তোমার?

কি চাই তোমার?
বল কি আছে আমার
এমন অমূল্য তোমাকে দেবার?
নিতে চাওতো এই দুটি হাত নাও
ওতে শ্রমিকের শক্তি আছে
সেরে নিও তোমার দৈনন্দিন কাজ
নইলে এই দুটি চোখ নাও
ওতে আছে অজস্র অপূর্ণ স্বপ্ন
সাদা কালো ছায়াছবির মত
দেখে নিও কখনো মিললে অবসর
নিতে চাইছো তো আমার
শরীরের ঘ্রাণ নিয়ে যাও
ওতে মিশে আছে পুরুষের ঘাম
নইলে নাও যেটুকু আছে সঞ্চয়
কিনে নিও এক গোছা গন্ধরাজ
হাসছো কেন?
নিঃস্ব কবির এতটুকু-ইতো সম্বল
কি চাইছো তুমি?
সে আমি কি করে বল দেই?
ও ব্যাটা বড় নিমকহারাম
ও এখন আর থাকেনা
এ বুকের খাঁচায়
শুনেছি সে করছে পরনারীর সংসার
সে নারীর আছে স্বামী-সন্তান
ননদ, দেবর, শ্বশুর-শ্বাশুড়ী
কত শত সম্পর্কের কচকচানি
লোকমুখে শুনি সেই নারী
মাঝেমাঝে হঠাৎ মনে হলে
তার দিকে চেয়ে ফেলে চাপা দীর্ঘশ্বাস
মাসের বেশীরভাগ দিনই পড়ে থাকে অবহেলায়
তাই মাঝে মাঝে বলি
হে হৃদয়! ব্যাটা ফিরে আয়
এখনো ফুরায় নি সময়
কে শোনে কার কথা
শেষ খবর পেয়েছি সে নাকি
ব্যাপক বিবাগী
আপন তার যে কোন নারী
সবার মাঝেই সে খোজে
পুরনো ক্ষতের ছবি
তুমি নাহয় অন্য কিছু চাও
তুমি বরং আপাতত
নিরাশ্রয় মধ্যমা নাও
শক্ত হাতে ধরে রেখ
ও কিন্তু বড্ড অসহায়

তুমি ভালবাসলেই

তুমি একবার অবৃত্তি করলে
আমার কবিতা পায় অমরত্বের স্বাদ
তুমি ভালবাসলেই
সে গল্পে লেখা হয় ইতিহাস
তুমি পাশে থাকলেই
ভীষণ ভাল লাগে এ পৃথিবী
পছন্দের যা ছিল হারিয়ে ফেলেছি
জীবন নামের ধূর্ত বনিকের কাছে
সব হারিয়েছি বলেই
আকাশের শূন্যতা বাসা বেধেছে
আমার একাকীত্বের বুকে
অন্তত একবার তুমিও হারিয়ে ফেল
তোমার হৃদয়
পায়েলের ঝংকার তুলে
চলে এস আমার ভুবনে
তুমি একবার অবৃত্তি করলে
আমার কবিতা পায় অমরত্বের স্বাদ
তুমি ভালবাসলেই
সে গল্পে লেখা হয় ইতিহাস

কৃষ্ণ

রাধা তুমি ভাব আমার-
ভালবাসার বুঝি ভীষণ অভাব
আমিতো রোজ রোজ ভালবাসছি
নতুন করে
জগী হতে চেয়েছি আমি
লুটেরা বানিয়ে ছেড়েছ তুমি
এখন আর নারীকে খুঁজি না
খুঁজি তাদের ভেতরের নারীত্বকে
ভালবাসায় লাগে না তা,
শুধুই ভোগে লাগে
আমি এখন ভীষণ রকম ভোগবিলাসী
দেবীর পায়ে ফুল দেবার ছলে
পা ছুঁয়ে দেই খুব গোপনে
হয়ত একেই প্রেম বলে
তাইতো রোজ সাজি কৃষ্ণ বেশে
প্রয়োজন নেই সীতা তোমার অগ্নি পরীক্ষায়
মেনকা রম্ভা উর্বশীরা
ওরাই নাচুক বিষের বাঁশীর সুরে
এইতো বেশ
কৃষ্ণ হয়েই কাটুক
একটা জীবন বৃন্দাবনে

বিশ্বাসঘাতক নিঃশ্বাস

জীবন ফুরিয়ে গেছে সেই কবে
তবুও চলছে বিশ্বাসঘাতক নিঃশ্বাস
শীতের পাখিরা প্রতি বসন্তে
ফিরে যায় নীড়ে
পত্রঝরারা খুজে নেয়
কচি সবুজের প্রান
এ সবে আমার কি এসে যায়
আমিতো ফুরিয়ে গেছি
ভুল ভালবেসে

তুমি কি আমায় প্রশ্ন করবে?

এস এখানে এসে বস
অত দূরে নয়
আমার কাছে এসে বস
কি হয়েছে তোমার?
এমন আলুথালু বেশ
চোখ এমন পাগল পাগল কেন?
প্রচুর সিগারেট খাচ্ছ বুঝি?
সারাদিন কোথায় কোথায় ঘুরে বেড়ায়?
শেভ করনা কেন?
জামার বোতাম খোলা কেন?
তোমাকে কে নামিয়ে দিয়ে গেল?
এদিক সেদিক কি দেখ?
কি খোজ তুমি?
আমার দিকে তাকও
তুমি কবিতা লিখছ না?
তুমি কি ক্লান্ত?
ভাত খাবে?
ঘুমবে তুমি?
কিছু কি চাই তোমার?
আমি কি চলে যাব?.......
বিদায় এ শব্দের মাঝে
লুকিয়ে আছে বারুদ
তোমার ওষ্ঠের ঘর্ষনে
আমার ভেতরে জ্বলায় আগুন
ঘুড়ি ওড়ে স্বপ্নের রঙ্গীন সুতোয়
কত ছোটাছুটি তার নীলাকাশে........

একটুও মনে পড়ে না তোমায়

তোমার কথা আমি ভাবি না মোটেই
ভীষন ব্যস্ত ভাববার সময় একদম নেই
শুধু সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠেই
মনে হয় তুমি কি করছ
দাত মাজতে বসলেই জীভে কামর দেই
তোমার টুথপেস্ট এর প্রিয় ফ্লেভার জানা হয়নি
নাস্তার টেবিলে বসে আমি মোটেই ভাবিনা তোমায় নিয়ে
আচ্ছা তোমার পছন্দ কি অমলেট নাকি মামলেট
এই ধর সকাল দশটা
ভুল করে কেউ দুধ চা নিয়ে এলে
আমি মনে মনে বিরক্ত হয়ে বলি রোদ্রিতা কে ডাক
দুপুর বেলা তো আমি ভীষন ব্যস্ত
শুধু দু চারবার ডাকবাক্স্ উল্টে দেখি
যদি তোমার চিঠি আসে
উফ তিনটার দিকে কি ভীষন গরম
ন্যাকু ন্যাকু প্রেমের সময় কোথায়
বেশী করে জল খেও জন্ডিজ হলে রক্ষা নাই
বিকেল বেলাটা বড় ম্যান্দা মারা
তো কি? আমি কি তোমায় নিয়ে ভাবি?
সন্ধ্যা হলে জমে জম্পেশ আড্ডা
নুরুটা বদের হাড্ডি
রোজ রোজ জিজ্ঞেস করে
-'কি কবি উদাস কেন? প্রেমে পরেছ বুঝি?'
ধুর বন্ধুগুলো বড় বেয়াড়া
আমি চলে যাই ভায়লিন ক্লাসে
ম্যাডাম ভাল বললেই মনে হয়
ইস তোমাকে কবে শোনাব বাজিয়ে
রাতের খাবারে কুমরো চিংড়ি দেখলেই
কি? দেখলেই কি?
আমি তোমার কথা ভাবি?
কখনো নয়
ইস সারাদিন কত খাটাখাটনি
আমার ঘুম পেয়েছে
মাথায় হাত বুলিয়ে দাও দেখি!!!
আমি কিন্তু তোমার কথা ভাবি না মোটেই
ভীষন ব্যস্ত ভাববার সময় একদম নেই
যদি ভুল করে সে আসে
যদি ভুল ভালবাসে
যদি মিথ্যে প্রহশন হয় মঞ্চস্থ
তবু বলি হোক কিছু হোক

ভায়লিনের দ্বিতীয় ক্লাস।

ভায়লিনের দ্বিতীয় ক্লাস। রূদ্র নামের মহিমা রক্ষা করতে আমি নিয়ম মাফিক আধা ঘন্টা লেট। মানুষ নাকি মরেও বদলায় না। আমিও তাদের দলে। তখন অষ্টম শ্রেনীতে পড়ি। প্রিয় একজন গনিত শিক্ষক, নাম তোফায়েল। পুরো নাম মনে নেই। আমরা অনেক সময়ই আমাদের আশেপাশের মানুষগুলো সম্পর্কে যতটুকু না জানলে চলে না ততটুকুই জানি। যেমন ধরুন আপনার পাশের বেঞ্জে যে ক্লাস করে আপনি কি জানেন তার কয় ভাই বোন? আমি নিজের কথা বলতে পারি, আমি জানি না।... তো তোফায়েল স্যারের ডেঙ্গু হল। তখন ডেঙ্গু প্রথম প্রথম দেখা দিচ্ছে। ধরা পড়া মানেই কাজ হয়েছে। সকালে আমার বেঞ্জ পার্টনার ফোন দিল। বললো -চল স্যারকে দেখে আসি। আমি রাত চারটায় ঘুমিয়েছি ফোন করায় একটু বিরক্ত। তবে ফোন করার কারন শুনে একটু নরম হলাম। কিন্তু ঘুম নরম হল না আরও শক্ত করে চেপে ধরলো। বন্ধুকে বললাম কাল যাব। পরের দিন দুপুর বারটায় আবার ফোন পেলাম। বন্ধুটির কন্ঠে উৎকন্ঠা-তাড়াতাড়ি স্কুলে আয়। আমার কেনর উওর এল- স্যার ৮টার দিকে মারা গেছেন। তাকে স্কুল মাঠে আনা হবে যে কোন সময়। আমি ফোন নামিয়ে রেখে থম মেরে বসে রইলাম। স্যারকে আর বলা হলনা-স্যার গনিত আমার সবচাইতে প্রিয় সাবজেক্ট আর আপনি অসম্ভব ভাল একজন মানুষ। স্যারকে স্কুলের মাঠে দেখলাম। নিজের মধ্যে অপরাধ বোধ হচ্ছিল। এমন সময় বন্ধুটি মুখ কালো করে আমার পাশে এে বললো- কাল যাবি না স্যারকে দেখতে। আমার দেরি হয়ে যায় সবকিছুতেই আমার বড্ড দেরী হয়ে যায়। ও আচ্ছা ভায়লিনের দ্বিতীয় ক্লাসের কথা বলছিলাম সেটা আর একদিন বলবো। তোফায়েল স্যার আমি এখন আর অংক করি না। বসে বসে জীবনের ধাধা মেলাই। আর যখন কিছুই মেলে না তখন আপনাকে খুব মনে পরে।

প্রথম ভায়লিন ক্লাস।

প্রথম ভায়লিন ক্লাস। শিক্ষিকা নিজ গৃহে ক্লাস নেন। আমি বাসায় ঢুকে দেখলাম হেজাব পরা একটা মেয়ে বসে আছে। আমাকে দেখে মেয়েটা একটু জরসর হয়ে বসল। পাশেই তার বাবা, তিনি একটু শক্ত হয়ে বসলেন। শিক্ষিকা এসে তার ছোটখাট ইন্টারভিউ নিলেন। মেয়েটি মাত্র দশম শ্রেনী উতরাল। শখের বসে শিখতে আসা, বাবা কিছুটা নারাজি। এবার আমার পালা। ম্যাডাম শুধু জিজ্ঞেস করল আমি তার ঠিকানা কোথায় পেলাম? হয়ত সিওর হতে চাইছেন আমি তাকে হাত পা বেধে... সব ডাকাতি করে নিয়ে যাব না। ইতোমধ্যে বাবাজির মুখ আরও গম্ভীর। মনেমনে হয়ত হাত কামরাচ্ছেন কেন যে মেয়েকে নিয়ে আসছেন। আমি তখন ভাবছি বাবাজি কে আরেকটু টাইট দেই। ম্যাডাম ক্লাস নিচ্ছেন আমি অনর্থক প্রশ্ন করছি হাসাহাসি করছি। বাবাজি কে দেখে মনে হল -আমি কই আইলাম আমার অবলা মাইয়াটারে লইয়া। আমার মনে হচ্ছিল এত ইনোসেন্ট বাচ্চা একটা মেয়ে তাও বাবা মাকে কত টেনশনে থাকতে হয়। আর সামাজিক অবস্হা দিনদিন অস্হির হয়ে যাচ্ছে। ইভটিজিং রেপ কত বাধা। বাংলাদেশে শিক্ষার কত ব্যবস্হা। মোটামুটি সব ঘরেই এখন বর্নমালা ঢুকে গেছে। তাহলে আমরা শিক্ষিত হচ্ছি না কেন? নিজেদের ভেতর মূল্যবোধ তৈরি হচ্ছে না কেন? তবে ক্লাস শেষে বাবাজি আর আমি বসে বসে বাংলাদেশের খেলা দেখলাম। বরফ একটু গলেছে মনে হচ্ছে। তিনি হয়ত ভাবছেন ডাকাতের মত চেহারা হলেও আমি ততটা ভয়াবহ কিছু করব না.....
পুরুষ মানুষ বড়ই খারাপ। ইহারা খাইতে দিলে বসতে চায়...

ঘুমাও তুমি

তোমার ঘুমের সাথে
বাড়ে অপেক্ষার দীর্ঘ রাত
তবু চাই ঘুমাও তুমি
তবু বলি মিলুক দু দন্ডের অবসর
চাতক দুচোখে স্বপ্নেরা বুলিয়ে দিক
ময়ূরের শান্তি পালক
আমার বড় হাসফাস লাগে
তোমার ঘুমন্ত মুখের দিকে চেয়ে
একাকীত্ব ঘিরে ধরে চারপাশ
তবু চাই প্রতি রাতে
... ছোট ছোট পরীরা হোক তোমার সন্তান
নিকোটিন পুড়ে যায়
জ্বলে যায় হাহাকার
আমার ভেতরে কেউ চিৎকার করে
সকাল ডাকে
আমি তার টুটি চেপে ধরে বলি
ও ঘুমাচ্ছে
ওকে দু দন্ড শান্তিতে ঘুমাতে দাও
ঘুমাও তুমি
আমি জেগে থাকি অনন্ত দীর্ঘ রাত
রোজ রোজ বদলে যায় চাল
ক্ষনে ক্ষনে বদলায় গুটি
ধ্যাত! আজকেই পোড়াব শতরন্জি
নৈশব্দের সুর হারিয়ে যায়
শব্দের কোলাহলে
আমি চাইছি জীবন আটকে যাক
এই মুহূর্তের ফ্রিজ শটে
এভাবেই শেষ হয় কোন কোন গল্পের উপখ্যান
শেষের সাদা পাতায় আরো কিছু লেখা যেত
থাক ওটা অলিখিতই থাক
তুমি ফিরে এসে ইচ্ছে মত রং চড়িও উপসংহারে

ভালবাসা তুমি

খুশী তুমি দুঃখ তুমি
স্বপ্ন তুমি আশা তুমি
হাজার কাজের ভিড়ে
এটুকরো অবসর তুমি
বিশ্ব জনসংখ্যায় একমাত্র মানবী তুমি
দীর্ঘ ক্লান্তিতে শান্তি তুমি
রাত্রির আধার তুমি
একাকীত্বের সঙ্গী তুমি
স্বপ্ন বোনার মিহিন সুতা
মরিচিকার পেছন ছোটা
সুখ কিংবা দুঃখ তুমি
হয়ত কার জীবন তুমি
সাকি তুমি সুরা তুমি
পান পাত্রের মাতাল তুমি
পাগলের পাগলী তুমি
পাওয়া না পাওয়ার জুয়ার টেবিল
হরতন রইতন ইস্কাপানের টেক্কা তুমি
প্যাকেটে শেষ সিগারেট তুমি
পথিকের পথ তুমি
অবিশ্রান্ত পথ চলা তুমি
ভালবাসা তুমি শেষ আশ্রয়
হয়ত কার জীবন তুমি
অপেক্ষায় রইলাম
যদি অভিধানে যুক্ত হয় নতুন শব্দাবলী
যদি তুমি খুজে পাও প্রকাশের ভাষা
চলে এস যে কোন দিন
পঙ্কতির পর পঙ্কতি মেলাতে
শব্দের পর শব্দ সাজাতে
রূদ্রের পথ চলায় তার একাকীত্বের ক্ষনিকের সঙ্গী হওয়ার জন্য আমি আপনার কাছে কৃতজ্ঞ।
কিছু চাওয়া বা পাওয়ার নেই। বরং যেচে যেটুকু দিয়েছেন তার জন্য ঋনী হয়ে রইলাম।
একটা অনুরোধ করব, রূদ্রের যে বন্ধ জানালা একদিন আপনার কাছে খুলে গিয়েছিল
সে জানালাটা বন্ধ রাখবেন। আমাকে ছোট করার মত মানসিকতা আপনার যে নেই সে বিষয়ে
আমার কোন দ্বিধা নেই। ভাল থাকবেন অনেক ভাল। ও আর একটা কথা কোন দিন ইচ্ছা হলে কবিতাটা প্রকাশিত হবে আশা রাখি। অপেক্ষার খাতায় আর একটা অপেক্ষা যুক্ত হল।
এ দীর্ঘ পথ যাত্রায়
কত বন্ধু কত শত্রু
কত আপন কত পর
কত আত্মীয় কত অনাত্মীয়
ভালবাসার ঠিকানাই শুধু অজানা
জানি না সে কোন পথিকের সহযাত্রী
সে পথিক হাটে কোন পথ
চল মুসাফির হয়ে চাই
তার সন্ধানে
রোজ রোজ পুড়ি
আর নিজেকে উল্টে পাল্টে দেখি
গতকালের থেকে আজকে কি আরেকটু খাটি হলাম
দূর শালা এ কেবল বাসি ছাই
এ দহনে দাগ পরে
মরচে সরে না
বড্ড ভয়
সে আমারও হয়
ভয়েরই জয় হোক
ভালবাসা চিতায় পুড়ুক
আহ! বহুদিনের প্রতিক্ষার হল অবসান
যে যাবার সে যাবে
তাতে কিছু কি থেমে যাবে
আমিই নাহয় পুড়বো ভীষন নীলে
রোজ রোজ পুড়ি
আর নিজেকে উল্টে পাল্টে দেখি
গতকালের থেকে আজকে কি আরেকটু খাটি হলাম
দূর শালা এ কেবল বাসি চাই
এ দহনে দাগ পরে
মরচে সরে না
দুঃখ দেবে বলে কেন
মিছে মিছি ভয় দেখাও
জান না দুঃখের চার দেয়ালের মাঝেই
আমার বসত বাড়ী

চিতায় জ্বলে আগুন

এস দুঃখ পোড়াই
এস সুখ পোড়াই
এস স্বপ্ন পোড়াই
এস অশ্রু পোড়াই
এস অভিমান পোড়াই
এস অভিধান পোড়াই
এস অপেক্ষা পোড়াই
এস আক্ষেপ পোড়াই
এস আপসোস পোড়াই
এস দীর্ঘশ্বাস পোড়াই
এস প্রতীজ্ঞা পোড়াই
এস আশীর্বাদ পোড়াই
ভালবাসা পুড়ে গেছে
চলে এস দেহটাকে দুজন মিলে
চিতায় জ্বালাই....

নির্ঘুম ঘুমের শেষে
ক্লান্ত শরীর সপে দেই
নিদ্রাদেবীর কোলে
ফিসফিসিয়ে সে বলে গেল
আমি এসেছিলাম

ভাসান

খ্যাপাটে বাতাস এসে বলে গেল
ঘর দোর জানালায় খিল দে
নইলে যে কোন সময় ঢুকে যাবে চোরাস্রোত
খুলে রাখিস না হৃদয়ের চৌকাঠ
হু হু করে দুঃখ ঢুকে যাবে
আমি হা হা করে হাসি
শশ্মানে যে পোড়ে
তাকেতো গঙ্গায়ই ভাসানো হয়
আমিও যদি ভাসি
তবে কার কি এসে যায়
পুরুষ বারবার হেরে যায় মাতৃত্বের কাছে। যে সন্তান অবেলায় ঘুমিয়ে পরেছিল দীর্ঘ ক্লান্তি শেষে মা তার ঠিক জানতেন তার খোকা ঘুম থেকে জেগে উঠবে ক্ষুধার্ত হয়ে। এই ভোর চারটার সময়ও ও উঠে দেখি টেবিলে ভাত দেয়া। খাচ্ছি আর ভাবছি প্রকিতি পুরুষকে মাতৃত্ব থেকে বঞ্চিত করে তাকে নারীর কাছে হারিয়ে দিল। সব জায়গায় পুরুষের যতই রাজত্ব হোক (যদিও অবলা নারী আর অবলা নেই, আর পুরুষ রাজত্বের সীমানাও দিন দিন মোঘল সাম্রাজের মত ছোট হয়ে আসছে) মাতৃত্বের কাছে সে সবসময়ই পরাজিত। স্যালুট তোমায় নারী।
ভুলে যেতে চাও?
যাও ভুলে যাও
দেখ কতটা নিজেকে ভোলানো যায়....
দীর্ঘশ্বাস দিন দিন আরো দীর্ঘ হয়
আকাশ ছোয়ার অব্যক্ত কামনায়
আকাশ ছুয়ে মেঘ হবে
মেঘ কেদেঁ কেটে বৃষ্টি ঝরবে
তুমি বৃষ্টি ছোবে
নোনা অশ্রুতে তৃষ্ণা মেটাবে....
বৃষ্টি ঝরায় মনের অদৃশ্য আকাশ
কতদূরে যাবে বল
ঘুমের জগতে স্বপ্নের বাসা
তার অন্দর মহলে আমার বেঠকখানা
দরজায় কড়া নাড়ে অবাক ভালবাসা

যাবত জীবন কারাদণ্ড

তোর স্বপ্নগুলো  সাজাব বলে
রং চুরি করেছিলাম প্রজাপতির ডানা থেকে
তোর রঙ্গিন ঘুড়ির দুটো পাখা চাই বলে
একটা দুরন্ত ঈগলের ডানা কেটে নিয়েছিলাম
তোর জ্যোৎস্না বিলাসের কথা চিন্তা করে
চাঁদটাকে পূর্ণিমায় আটকে দিয়েছিলাম গোটা দু'মাস
তোর জন্য একটা মালা গাঁথব বলে
হাজার জোনাকির প্রাণ বধ করে ছিলাম
তুই বৃষ্টি পছন্দ করিস বলে
মেঘগুলো সব বুক পকেটে পুরেছিলাম
অনাহারে মরল অসহায় কৃষক
তোর জন্যই তো পাগলা প্রেমিকের
হাত থেকে গোলাপ ছিনিয়ে দৌড়ে পালালাম
মনে আছে পদ্ম পাতর জল জমিয়ে ছিলাম যে?
আর এতগুলো পাপ আর অপরাধের কারণে
নিষ্ঠুর আদালত রায় শোনাল ভালবাসার
যাবত জীবন কারাদণ্ড
কিন্তু পদ্ম পাতার জলগুলো যে
রয়ে গেছে এখনও আমার কাছে
জমিয়ে রেখেছি বুকের মধ্যে

ইচ্ছে করে

ইচ্ছে করে স্বপ্ন সাজাই
নতুন কিছু রঙ্গে
রং গুলো সব হারিয়ে গেছে
পদ্ম পাতার জলে
ইচ্ছে করে উড়ে বেড়াই
আকাশ করে তোমায়
আকাশ আজ ভীষণ কালো
ভয় দেখায় আমায়
ইচ্ছে করে সাতার কাটি
জ্যোৎস্না করে সাথী
চাদের বুকে গ্রহণ আজ
অপেক্ষাতে আছি
ইচ্ছে করে তোমায় নিয়ে
দৌড়ে পালাই দূরে
ভালবাসার এই কবর
কে রেখেছে খুড়ে?

মনে মনে

ভাবটা এমন দেখছ তুমি,
তাই মুচকি করে হাসছি আমি।
শুনছি তুমি বলছ কথা,
খাচ্ছ চিবিয়ে আমার মাথা।
বসেছ এসে পাশে যেন,
মুখটা এত গম্ভীর কেন?
দেখছি তুমি লিখছ কি?
ভালবাসার কথাটি?
বসে বসে শুনছ গান,
যাচ্ছে জুড়িয়ে আমার প্রাণ।
তলিয়ে আছ গভীর ঘুমে,
বুকটা আমার বালিশ করে।
সারাদিন বসে আঁকি,
হাবিজাবি কত ছবি।
রাতে যখন সবাই ঘুমায়,
কেন যেন খুব কান্না পায়।

দূরের ভালবাসা

ভাবছ তুমি যাচ্ছি দূরে
কোথা খুঁজে পাবে মোরে
কাল বেলার চায়ের কাপে
চিনি হয়ে আছি মিশে
রোজ তোমার যাবার পথে
যে মেয়েটা ফুল বিকায়
আছি মিশে তার চোখের মায়ায়
বাসায় তোমার ফেরার পথে
চেয়ে দেখ আকাশ পানে
দুরন্ত মেঘে আমায় পাবে
দমকা বাতাস বয়ে যায়
আমার কথাই কয়ে যায়
জ্যোৎস্না রাতে একলা তুমি
ভাবছ আজ কোথায় আমি
চাঁদটা আজ আলো করেছে
আমি হয়ে তোমায় ছোবে
নদীর পারে দাড়িয়ে যখন
জলে আমার ছায়া তখন
গভীর রাতের দীর্ঘশ্বাসে
আছি আমি আছি মিশে
অনেক দূরে আজ আমার কায়া
তোমর পৃথিবী জুড়ে আমার ছায়া
যখন একলা খুব মনে হবে
খুঁজে দেখ আমায় পাবে
জড়িয়ে আছি তোমায় আমি
কোমল বাহুর আলিঙ্গনে
থাকব আমি তোমায় ঘিরে
যাই না যতই দূরে
মৃত্যু আমায় করেছে ম্লান
ভালবাসা মোর চির অম্লান

মন ভুলা

মনোযোগের বড্ড অভাব টের পাই আজকাল
সবার মাঝে থেকে কখন যে হারিয়ে যাই
নিজেই বুজতে পারিনা
চোখ দুটোতে ছানি পরে গেছে কি?
তবে কেন ঝাপসা দেখি মাঝেমাঝে?
নাকি জলে ভরে যাচ্ছে যখন তখন?
বুকের বাম পাশে ব্যথাটা কি
একটা মাইনর হার্ট এ্যাটাক এর
প্রথম লক্ষণ?  নাকি ভেতরে ডুকরে কাঁদে কেউ?
গলার কাছে কেন দলা পাকিয়ে ওঠে কান্না?
বুড়ো হয়ে গেছি বলেই কি এত অবহেলা?
ঠিক বুঝতে পারি না, কত হল বয়স?
একশ সাতাশ না আরও কিছু বেশী?
নাকি তোকে বড় বেশী ভালবাসি?

বিসর্জন

সাতশ বছরের পুরনো নগরী
শুধুই ধ্বংসাবশেষ, আস্তর ওঠা
দেয়াল, খসে পড়া জানালা, চৌকাঠ
ভাঙ্গছে প্রতিনিয়ত একটু একটু করে
প্রতিটি লুকনো কোণ থেকে বেরিয়ে আসে
কিছু হারান আসবাব, তুলে ধরে
ছুড়ে দেয়, ভাঙ্গনের প্রতিধ্বনি
শোনে নীরব নিষ্ঠায়
ভাঙ্গনের পর্বটাই কষ্টকর, দীর্ঘ, যন্ত্রণা দায়ক
এরপরেই শুরু হবে খোঁড়া
যদিও কুল কুল ধ্বনি আর
চোরা স্রোত শোনা যায় ইতিমধ্যেই
টের পাওয়া যায় গভীরতম নদীর অস্তিত্ব
খুরতে হবে সহস্র বছর, যতদিন না রূপালী
আলোয় ভেসে যায় চরাচর
যার অপেক্ষায় কেটে যায় শত কোটি বছর
তারপর নদী বয়ে যাবে আগমনের উষ্ণতায়
তখন দেহটা চিতায় পুড়িয়ে হবে ছাই
লাল কাপড়ে ঢেকে মটকায় ভরে
ভাসিয়ে দেবে সেই খরস্রোতায়, সাথে দুটো গন্ধরাজ
বিসর্জনের আনন্দে তারপর বয়ে চলা সারাজীবন

রক্তে মিশে যাওয়া লোহিত কণিকা

আমি দমকা বাতাস
তোকে ছুঁয়ে দিয়ে
পালিয়ে যাব
আমি পূর্ণিমায় ভরা জ্যোৎস্না
রূপালি আলোয় তোর দু'কুল ভাসিয়ে
আমাবস্যায় হারিয়ে যাব
আমি কালবৈশাখ এ কুড়িয়ে
পাওয়া শীলাখন্ড, তুই গালে
চেপে ধরতেই বাতাসে ফুরিয়ে যাব
আমি হাওয়াই মিঠাই, তুই
গালে পুরতেই আমি নাই
আমি রঙ্গিন ফানুস
তুই আকাশে ওড়াতেই ,বিন্দু হয়ে
মেঘের ওপারে চলে যাব
আমি ঘন বর্ষার জল
তোর জানালার কাঁচে ঝাঁপিয়ে পরা গন
তপ্ত সূর্য হাসলেই মিলিয়ে যাব
আমি? আমি কিছু নই
আমি কেউ নই
আমি তোর রক্তে মিশে যাওয়া
লোহিত কণিকা
ভালবাসা আমার নাম।

একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস

জন্ম আমার আজন্ম এক ভুল
আগমনের উল্লাস কান্নার মুহূর্তে
একদলা কাদা মুখে ঠেলে দিয়ে
পৃথিবী বলেছিল একদম চুপ
নইলে গলা টিপে ছুড়ে দেব আস্তা-কুড়ে
তার ঋণ শোধে কেটে গেছে আধা জীবন
বাস্তবতার মুখে দাড়িয়ে সব রং মুছে যায়
ফিকে হয়ে যায় জীবন
ভালবাসা আমার রঙ্গিন ফানুস
অন্তর জ্বলে যায় কাঙ্গালপনায়
ঘৃণা ধরে যায় নিজের হীনতায়
জন্ম আমার আজন্ম এক ভুল
পৃথিবীর অভ্যর্থনা নেই, নেই
উলু ধ্বনি আযান সুমধুর
নিঃশ্চুপ অবহেলা আর ক্লান্তিকর
সহানুভূতির কালো ছায়া
তুমিও তাদের-ই একজন, উষ্ণতা নেই
ঠাণ্ডা হৃদয়
আজন্ম ভেতরে জেগে ওঠা জলপ্রপাত
রুখে দাঁড়াবার ক্ষমতাহীন, প্রেমহীন
ভালবাসা বিহীন
ভিড়ে হরিয়ে যাওয়া আর দশজনের ব্যতিক্রম
নই আমি তোমার কাছে
তোমার উষ্ণতা পেলে কোমল বাহুর
আলিঙ্গনে, আমি হতে পারতাম পদ্ম
কিন্তু জন্ম আমার আজন্ম এক ভুল
পঙ্কিলতা প্রতি শতদলে ছড়িয়েছে
শিকড় নির্মম নিষ্ঠায়
তুমি ব্যতিক্রম নও, হাজার জনের মত
একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস আমার দিকে চেয়ে।

ভুল প্রণয়

ভুল প্রণয়ের ভুলগুলো সব,
শুধরে নেবার প্রগার খেলায়,
প্রায়শ্চিত্ত নামক ফুলের মায়ায়;
আত্মত্যাগ আর বিসর্জনের তুমুল মেলায়
কাছে এসে পুড়ে ও পুড়িয়ে
সব, কিসের নেশায়?
ধ্বংস করে ভালবাসার কুসুম
বীজ বুনে দিয়ে প্রতিশোধের আগুন,
পতঙ্গ হয়ে সুখের আশায়
ঝাপ দিয়ে সেই গোলক ধাঁধায়;
হারিয়ে আজ অস্তিত্বের অংকুর,
বুনে চলে ধ্রুমজাল রহস্য সূতায়
আবরণে জরিয়ে তুমি, হারিয়ে
আজ নিজেকে খুঁজে ফের কিসের মায়ায়?
যে গেছে সে গেছে, আসবে না আর ঝাঁপিয়ে দু'কূল।
বর্ষা হয়ে ঝরবে না আর সুখের বানে,
অশ্রুসজল দু'চোখ মেলে খুঁজবে না আর
ভালবাসার মানে।

একটা কবিতা

রবীন্দ্রনাথ জীবনানন্দ গুলে খেলাম
ওরা আমায় একটা শব্দও ধার
দিল না
চারুকলার করিডরে দৌড়ে দৌড়ে
আমার পায়ে ফোসকা পরে গেল
একটা ছবিও আকা হল না
পাবলিক বাসে দু'ঘণ্টা জ্যামে আটকে ছিলাম
চন্দ্রিমায় ফুসকা খাব বলে
গিয়ে দেখি সবকটা দোকান বন্ধ
ভালবাসার দিনে দস্যি প্রেমিকগুলো সবকটা
গোলাপ চুরি করে নিয়ে গেছে
আমর জন্য শুধুই কাটাগুলো
যেদিন জ্যোৎস্না সাঁতারের আয়োজন করলাম
পাগলাটে মেঘ এসে চাঁদটাকে
গিলে খেল
লোডশেডিং এ আইসক্রিম পার্লারগুলো
আজ দেড় দিন ধরে বন্ধ
কপোতকপতিরা আর ভিড় করে না সেখানে
সারা শহর তন্ন তন্ন করে খুঁজেও
সেই ফেরিওয়ালাকে পেলাম না
এক ঝাঁক গ্যাস বেলুন আকাশে ওড়াব বলে
গিটারের তারে সুর বাধবো বলে
এক ছড়া নতুন তার কিনেছিলাম
সেগুলোতে সব জং ধরে গেছে
তোমাকে আমার কিছুই দেয়া হল না
এই নাও একটা কবিতা দিলাম
তোমার চুড়ি আছে?
কাচেঁর চুড়ি?
তুমি হাত ভর্তি রঙ বেরঙের চুড়ি পড়ে
আমায় একটা চিঠি দেবে?
নিশাচর ঘুমিয়ে গেছে সূর্যের শত্রুতায়
রাত শেষে ভোর হল
তবু জেগে আছি কিসের মায়ায়......
তুমি ফিরে এসে খুজে নিও আমায়
 রাতভর ক্লান্ত কোন পথের ধূলোয়....
আমি আয়না দেখিনা
আমায় চোখে আর পবিত্রতা নেই
তাই তোমারদুটি চোখ খুজে ফিরি
নিজেকে পবিত্র করবো বলে...
একাকীত্ব আমাকে রাতভর জাগিয়ে রাখে
দিনভর নেয় প্রতিশোধ
আমি কবে তোর পাকা ধানে মই দিয়েছি
তবে কেন আমাকে পোড়াচ্ছিস অনুক্ষন
একাকী রাতের নির্জনতায় হাতড়ে বেড়াই শূন্যতা...আধার ছবি আকে কোন প্রিয় মুখ.....তাতে রং ছড়ায় একরাশ নিকোটিন......তোমার কাছে যাবার কথা ছিল....কিন্তু তুমি তো ঠিকানা বলনি....এখন গভীর রাত আমি হাতড়ে বেড়াই শূন্যতা.....খুব বেশী সময় নেই....ফুরিয়ে যাবে এইটুকুও বিলাসিতা.....
সহজে পাই বলেই কি
সহজে হারাই
আজ থেকে সহজ কিছু নয়
সহজকে কঠিন করে
আজীবন ধরে রাখার প্রত্যয়
বারান্দায় দাড়িয়ে সিগারেট টানতে টানতে হঠাৎ করে আকাশে চোখ তুলে তাকিয়ে দেখি বেশ বড়সড় একটা চাঁদ। সমুদ্র যাত্রায় নিয়মিত চাঁদের বাহারি রূপের খুঁটিনাটির খবর রাখলেও এই ইট কাঠের নগরে ঢুকলেই আমার মধ্যে যান্ত্রিকতা প্রবেশ করে। যাই হোক বুঝলাম দু একদিন আগে পূর্ণিমা ছিল। চাঁদ সবসময় সব রূপেই সুন্দর। আজও তাই মনে হল। সাথে সাথে যে নতুন প্রশ্নটা মাথায় উকি দিও তা হচ্ছে সে কেন সুন্দর? একটাই মাত্র চাঁদ তাই? উহু উওরটা মনমত হচ্ছে না। চাঁদের ধার করা আলো সুন্দর তাই? মানতে ইচ্ছা করছে না। চাঁদের কলঙ্ক তাকে সৌন্দর্য দিয়েছে? তা কি করে হয়? তবে তো পৃথিবীর তাবৎ চোর বদমাশ সাফারি সুট পরে ঘুরে বেড়ালে বাহারি কথা বললে সুন্দর হয়ে যেত। অবশ্য এমন সুন্দরও সমাজে আছে। সময় গেলে যাদের মুখোশ খুলে যায়। অনেকটা সেই কাকের ময়ূর সাজার মত ব্যাপার আর কি।
চাঁদটা সুন্দর কেন জান? কারণ সে একা। শত সহস্র কোটি বছরের একাকীত্বের অভিশাপ চাঁদের বুকে। এমন কি নক্ষত্র গুলো পর্যন্ত এমন নিষ্ঠুর যে চাঁদের আলো যত বেশী হয় ততই তারা দূরে সরে যায় অথবা অদৃশ্য হয়ে যায়। আর প্রতিটি মানুষের বুকের অতল গহীনে বাসা বেধে আছে একই রকম শত সহস্র কোটি বছরের একাকীত্বের অভিশাপ। তাই প্রতিটি মানুষ নিজের ছায়াকে দেখে অবাক বিস্ময়ে। আর চাঁদ প্রতিটি মানুষের কাছেই সুন্দর। যেমন প্রতিটি অ-সংসারী সন্ন্যাসী। তাই ভাবছি আমিও সন্ন্যাস নেব। রুদ্রাক্ষের মালা আর চন্দনের তিলক পড়ব। মায়া কাটিয়ে মহামায়ার কোলে আশ্রয় নেব......

মেডিসিন

মা তুমি যখন ক্যালসিয়াম ম্যাগনেসিয়াম পটাসিয়াম সিনকারা কডলিভার অয়েল সাফি আরও যা আছে আদর করে নিয়া আস আমার মুন চায় আমি কাইন্দা কই -ছাইরা দে মা কাইন্দা বাচি। এই ঔষধ যে কোন হালার পুতে বানাইছে অরে পাইলে অক্করে মাইরা লাইতাম। মা এত আদর কর কেন? আমি যখন একা একা চলে যাব তখন কে দেখবে আমাকে। ভালবাসি তোমাকে অনেক অনেক মা......

ভাগ্য রেখা

ডক্টর
কি নির্মম ভাবে ভাগ্য রেখা তোমার হৃদয় রেখাকে কেটে গেছে। আমি অবাক চোখে চেয়ে থাকি। ভাগ্য রেখা যেখানে তীর্যক ভাবে হৃদয় কে ভেদ করে গেছে তার আগের জীবন শেষ হয়ে গেছে। তারপর তোমার পূনর্জন্ম হয়েছে। কিন্তু তোমার সে উপলব্ধি নেই। তাতে কোন ক্ষতি নেই হয়ত। কিনতু সামনে ভালবাসার যে অসীম ঢেউ এগিয়ে আসছে তাতে তোমার কত কি ভেসে যাবে আমি তাই ভাবছি....
কিছু মানুষ কষ্ট দেয়। ব্যাপার না মানুষতো কষ্ট দিতেই পারে। গরু ছাগল হইলে তো আর দিত না। এই পর্যন্ত ঠিকই আছে। কিন্তু কেউ কেউ আবার কষ্ট দিয়া, সেই কষ্টরে খুচাইয়া আবার মজা পায়। হায়রে মানুষ
নিকোটিনের সাথে নারীর অঘোষিত শত্রুতা
আর পুরুষের অনাকাঙ্খিত প্রেম......
মিথ্যা দিয়ে কিছু অর্জন করা যায় হয়ত কিন্তু তা ধরে রাখা যায় না-রুদ্র অনির্বান

তুমি আমাকে ভালবেসো না সত্যিই বলছি ভালবেসো না

প্রতিটি প্রত্যাখ্যান আমাকে দেয় নতুন জীবন
প্রতিটি ব্যর্থতায় আমি আড়মোড়া ভেঙ্গে জেগে উঠি
প্রতিটি অপেক্ষা আমাকে ক্ষুধার্তের কষ্ট শেখায়
প্রতিটি বেদনা আমাকে সন্তানহারা মায়ের পাশে দাড় করিয়ে দেয়
প্রতিটি ছলনায় আমি প্রতিদিন প্রতারিতদের দলে ঢুকে যাই
প্রতিটি নির্ঘুম রাতে আমি হয়ে উঠি অতন্দ্র প্রহরী
প্রতিটি অবহেলা আমাকে বিদ্রোহী করে তোলে
প্রতিটি দ্ব্যর্থক কথা আমাকে করে তোলে ভাষাবিদ
প্রতিটি পোড়া সিগারেট ভেতরে জ্বালায় মনুষ্যত্বের বীজ
প্রতিটি প্রেম আমাকে ঘর থেকে বাইরে নিয়ে যায়
তুমি আমাকে ভালবেসো না সত্যিই বলছি ভালবেসো না
আমি পুড়ে পুড়ে ছাই হয়ে ছড়িয়ে যেতে চাই
দুর্ভিক্ষের মাঠে, সন্তান হারা মায়ের আচলে
পথ শিশুর কুড়িয়ে পাওয়া হঠাৎ হাসিতে
সীমান্তে দাড়িয়ে ভিনদেশী ষড়যন্ত্র নস্যাৎ এ
আমি বিলীন হয়ে যেতে চাই দেশপ্রেমের মন্ত্রে
গ্রাম্য জনপদে বর্ণমালার হাতে খড়িতে
কৃষকের পাশে দাড়িয়ে জোতদারকে গালি দিতে
আমি উজাড় হয়ে যেতে চাই মনুষ্যত্বের জয়গান গেয়ে
তুমি আমাকে ভালবেসো না সত্যিই বলছি ভালবেসো না
আমাকে ঠেলে দাও পথে বিপথে ধুলোর মাঝে
প্রতিটি নির্যাতিত মানুষের দ্বারে

সাংসারিক সন্ন্যাস

সম্পর্কের শিকল কাটতে কাটতে আমি ক্লান্ত। সম্পর্ক শব্দটির অর্থ বুঝে ওঠার আগেই এই গুরু দায়িত্ব আমার উপর কেন বা কি ভাবে চাপিয়ে দেয়া হল জানি না। কিন্তু আমি অবিরাম কেটে চলেছি এ শৃঙ্খল। আজ এতগুলো বছর পর পেছন ফিরে তাকালে দেখতে পাই সম্পর্কের বিভিন্ন নামের মরচে পরা অবয়ব। এখন সংসার নামক যে বস্তুটি আমার চোখের সামনে তাতে হাতে গোনা দু চারজন ছাড়া কেউ বাকী নেই। এ শেকলগুলো ও কাটছে, কখনো আমি, কখনো সময়। তবে ধৈর্য হা...রিয়ে ফেলছি। মনে হয় হ্যাক্স ব্লেড এ আর ধার নেই। কিন্তু ব্যাপারটা যত দ্রুত সেরে ফেলতে পারি ততই মঙ্গল। আমার জন্য নয়। সংসারের বাকী পাচঁটি প্রানীর জন্য। আমার মা ও সেটি বুঝতে পারছেন। কিন্তু মানতে পারছেন না। তাই রোজ রোজ ঝালাইয়ের কাজ করে যাচ্ছেন। তবে আমি বুঝতে পারছি এ সবই অর্থহীন। আমার মধ্যে যে বৈরাগ্য ঢুকে গেছে তাকে সামাল দেবার ক্ষমতা আমার নেই। সাংসারিক সন্ন্যাস ছেড়ে এবার সত্যিকারের সন্ন্যসকে বরণ করে নেবার সময় এসে গেছে......

আজকাল জীবন যাপন

নিদারুন মানসিক যন্ত্রনার মধ্যে হঠাৎ করিয়া মনে হইল ভোর হইতেছে। আমি বহু বছরের অন্ধত্ব হইতে মুক্তি পাইতে চলিয়াছি। মনে হইতে ছিল বিভিষিকাময় ঝড়ে যে বৃক্ষের শেকড় উপড়াইয়া পড়িবার জোগাড় হইয়া ছিল কেহ যেন তার কান্ড ধরিয়া দাড় করাইবার প্রানপন চেষ্টা করিতেছে। সময়ের সাথে সাথে বুঝিতে পারিলাম যে পাশে আসিয়া দাড়াইল সে ও বহু ঝড় ঝাপটা অতিক্রম করিয়া আমারই মত তীরে ভিড়িতে চাহিতেছে। মনে মনে আহ্লাদ হইল । এইবার বুঝি দুই দুঃ...খ মিলিয়া একটা কিছু রচনা হইবে। কিন্তু সময় বড় অদ্ভুত আর তাহার চাইতেও বেশী অস্হির। হঠাৎ চোখ মেলিয়া দেখি সূর্য ওঠে নাই।আমিই হয়ত উওর গোলার্ধের সর্বোচ্চ অক্ষাংশে বসিয়া আছি। এখানে সূর্যের আলো পৌছাইবার নিয়ম নাই। চারদিকে ঘুটঘুটে অন্ধকারে আমার প্রান স্যাতস্যাতে হইয়া গেছে। আর আমি বসিয়া আছি এক হাহাকার বুকে চাপিয়া ধরিয়া। আর যে পাশে আসিয়া ক্ষনিকের তরে বসিয়াছিল সে খুব সন্তপর্নে হাত ছাড়িয়া উঠিয়া গেল। কেনই বা আসিল কেন বা চলিয়া গেল বুঝিলাম না। শুধু বাতাসে ফিসফিসানি শুনিতে পাই স্যতস্যাতে জীবন ধরিয়া রাখিয়া কি লাভ। তাহার চাইতে বরং মুক্ত হইয়া যা, উওর মেরু হইতে নামিয়া আসিয়া মাটির সঙ্গে মিশিয়া যা। পরজন্ম বলিয়া যদি কিছু থাকে তো ফিরিয়া আসিস নইলে বৃক্ষ হইয়া জন্ম লাভ করিস। বৃক্ষ খুব ভালবাসিতে জানে। তুইও আশ মিটাইয়া ভালবাসিতে পারিবি। তখন হয়ত ক্ষনিকের তরে যে আসিয়াছিল সে আর ভালবাসার অভাব বোধ করিয়া ফিরিয়া যাইবে না। বরং হয়ত পাখী হইয়া তোরই বুকে কুঠির বাধিবে। বাতাসের ফিসফিসানি শুনিয়া আমার গায়ের রোম খাড়া হইয়া যায়। নিজেকে পাগল পাগল লাগে। মনে হয় একটা মানব জন্ম ভালবাসার জন্য নষ্ট করিয়া ফালাইলাম। কিন্তু সে অধিকা কি আমার আছে? বাচঁতে ইচ্ছা করে, মনে হয় বৈরাগ্য গ্রহন করি। সংসারে যখন টিকতে পারিলাম না, যাই অ-সংসারে যাইয়া দেখি। যদি সিদ্ধি মেলে। যদি মেলে তো মুক্তি পাইয়া গেলাম আর যদি না মেলে তো ফের বাতাসের সাথে কানাঘুষা করিয়া একটাকিছু সিদ্ধান্ত লইয়া লইব.......

নাবিক ও মেঘবালিকা

আধখানা ভাঙ্গা চাঁদ, ডুবে যাওয়া নক্ষত্রের রাত
পাল ছেড়া দিশেহারা বেহিসাবি নাবিক
চেয়ে দেখে অসীম শূন্যতায়
ধ্রুবতারা মুছে গেছে  আকাশের বুক থেকে
বাদুরের ডানায় ভর করা নিকষ কালো রাতে
গুনে গুনে হিসেব মেলে না
খসে গেছে কত নাম না জানা তারা
চাতকের তৃষ্ণা নিয়ে জেগে থাকা
অন্তত এক ফোটা বৃষ্টির অপেক্ষা
কাঠঠোকরার মত নির্মম নিষ্ঠায়
বোবা অনুভূতির অবিরাম ঠুকরে চলা
অপেয় নোনা জলের অথৈ সাগর
অধীর হয়ে চায় একফোঁটা পিপাসার জল
মেঘ বালিকা! ও মেঘ বালিকা!!
তুমিতো বুকে ধারণ করেছ তৃষ্ণার জল
চেয়ে দেখ কৃষাণের ফসলি মাঠ
আজ ফেটে চৌচির, কোথাও প্রাণ নেই
শুধুই শুষ্ক আরব্যরজনী
ধ্রুবতারা মুছে গেছে  আকাশের বুক থেকে
গাঙ্গচিল হারিয়েছে উড়বার শকতি
তোমার চোখে ধ্রুব তারার আলো
আঙ্গুলে সেতারের সুর
নেমে এস নীলিমার বুক থেকে
নেম এস এই মর্তের পৃথিবীতে
এস এস কৃষাণের অঝোর বৃষ্টি
বেহিসাবি নাবিকের মৎসকুমারি